শ্যামাপ্রসাদ স্মরণে কেন তৃণমূল, প্রশ্ন বিরোধীদের

বাংলাদেশ সফর তাঁদের কাছাকাছি এনেছে। ললিত-সুষমা কাণ্ডে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাকে কেওড়াতলায় পাঠালেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০৩:৩১
Share:

মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা ফিরহাদ হাকিমের। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। — নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশ সফর তাঁদের কাছাকাছি এনেছে। ললিত-সুষমা কাণ্ডে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাকে কেওড়াতলায় পাঠালেন তিনি। তার ফলে তৃণমূল-বিজেপির নৈকট্যের জল্পনা নতুন করে গতি পেয়েছে।

Advertisement

জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুদিবসে মঙ্গলবার তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। এর আগে শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন বা মৃত্যুদিনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। শ্রদ্ধা জানানোর ভার থাকত সরকারি আধিকারিকদের। এ বার তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে সরাসরি মন্ত্রীরা হাজির হলেন শ্রদ্ধা জানাতে। এতে বিরোধীরা যেমন বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতার আঁচ দেখতে পাচ্ছেন, তেমনই তৃণমূলের মধ্যেও কিছু প্রশ্ন দানা বাঁধছে। বিজেপির সঙ্গে মৈত্রীর বার্তা শাসক দলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাবে কি না, এই ভাবনা দেখা দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, সংখ্যালঘুদের মন পেতে যে তৃণমূল সর্বদা সক্রিয়, তারা কি সংখ্যাগুরুদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে?

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ভাবনাটি ‘অবাস্তব’ বলেই দাবি করছেন় এ দিন ববি বলেছেন, ‘‘শ্যামাপ্রসাদের আদর্শের সঙ্গে আমরা ভিন্নমত হতে পারি। কিন্তু তাঁরা দেশনেতা। সুতরাং তাঁদের শ্রদ্ধা জানানো আমাদের বিশ্বাস, দায়িত্ব এবং সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক নেই। মৃত্যুর পরে কোনও ব্যক্তি বিশেষ কোনও দলের থাকেন না। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়ে দেন, বিজেপির সঙ্গে জোটের প্রশ্ন নেই। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ কি নিজের কেকটা ভাগ করতে চায়?’’

Advertisement

কিন্তু শ্যামাপ্রসাদের আদর্শের মধ্যে বিজেপির শিকড় জড়িয়ে রয়েছে। তাই এ দিন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতৃত্ব শ্যামাপ্রসাদের গলায় মালা দেওয়ার স্পষ্ট, তাঁদের সঙ্গে বিজেপির ম্যাচ-ফিক্সিং হয়েছে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কটাক্ষ, ‘‘দুই দলে মালাবদল হবে বলেই তৃণমূল নেতারা গিয়ে শ্যামাপ্রসাদকে মালা দিয়েছেন!’’

তৃণমূলের উদারতাকে রাজ্য বিজেপি অবশ্য স্বাগতই জানিয়েছে। সূর্যবাবুর কটাক্ষের জবাবে বিজেপির রাহুল সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিপিএম ভারতের মুনি-ঋষিদের কোনও দিনই মান্য করে না। বিদেশিদের দালালরা কী বলল, তাতে কিছু এসে যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement