কংগ্রেসে যোগদান করেছেন সন্তোষপুরে অঞ্চল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আলম। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতালিকায় একই আসনে একাধিক নেতা-নেত্রীর নাম রয়েছে। তবে প্রার্থিপদ পেতে হলে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হবে। এমন আভাস পেয়েই কংগ্রেসে যোগদান করেছেন বলে দাবি করলেন মালদহের চাঁচলের তৃণমূলের অঞ্চল সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। তাঁদের সঙ্গে শতাধিক নেতা-কর্মীও দলবদল করেছেন বলেও দাবি। সোমবার রাতে দলবদল ঘিরে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে জেলা তৃণমূল এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে।
জেলার কংগ্রেস কমিটি সূত্রে খবর, সোমবার রাতে চাঁচলের খরবা এবং মতিহারপুর অঞ্চলে দলের যোগদান সভা হয়েছে। ওই কর্মসূচিতে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আঞ্জারুল হক এবং অঞ্চল কংগ্রেসের সভাপতিদের হাত ধরে হাতশিবিরে যোগ দেন মতিহারপুর অঞ্চলের সন্তোষপুরে অঞ্চল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আলম। পরে সে রাতেই খরবা অঞ্চলের নৈকান্দায় অঞ্চল তৃণমূলের সহ-সভাপতি সাইদুজ্জামান ওরফে ইলেকট্রনও একই পথ অনুসরণ করেন। দুই নেতার দাবি, তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের ঘর ভরিয়েছেন শতাধিক তৃণমূলকর্মী।
কংগ্রেসে যোগদানের পর শাসকদলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মোক্তার আলম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থিতালিকার জন্য সন্তোষপুর বুথ থেকে আমার স্ত্রী হাবিবা খাতুনের নাম গিয়েছিল। কিন্তু আড়ালে-আবডালে আভাস পাচ্ছি, শুধু আমার স্ত্রী-ই নন, প্রার্থী হওয়ার জন্য একই বুথ থেকে একাধিক নাম জমা নেওয়া হয়েছে। যা ইঙ্গিত পাচ্ছি, তাতে তৃণমূলের প্রার্থী হতে গেলে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে। একই বুথ থেকে একাধিক নাম জমা হওয়ায় টাকা নেওয়ার বিষয়টিও স্পষ্ট হচ্ছে। যাঁর টাকা, তাঁরই পদ। সে জন্যই এই দুর্নীতিগ্রস্ত দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলাম।’’
মোক্তারের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। চাঁচল ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি শেখ আফসার আলির দাবি, ‘‘ব্লক ও অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তৃণমূলে অর্থের মাপকাঠি দিয়ে কাউকে পরিমাপ করা হয় না। যোগ্যদেরই প্রার্থী করবে তৃণমূল।’’ মোক্তারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন তিনি। আফসারের দাবি, ‘‘এলাকায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন মোক্তার আলম। কংগ্রেসের টিকিট পাওয়ার লোভেই দলত্যাগ করেছেন। রাজনীতিতে টাকার লেনদেন তৃণমূল করে না।’’
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দলবদল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। মালদহ উত্তরের সাংগঠনিক জেলার বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি অয়ন রায়ের দাবি, ‘‘টাকাপয়সার রাজনীতি সব থেকে ভাল বোঝে তৃণমূল। টাকা ছাড়া কোনও কাজই তৃণমূলে হয় না। আমাদের দলে আসার জন্য যোগাযোগ করছেন এলাকার নেতারা।’’