ফের সরব সৌগত। ফাইল চিত্র।
গ্রেফতার হওয়ার পরে পরেই তৃণমূল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সব পদ থেকে সরিয়ে দেয়। মন্ত্রিসভা থেকেও তাঁকে বাদ দিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর আড়াই মাস কেটে গেলেও দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এখনও বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে রয়ে গিয়েছেন তিনি। পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হয়েছেন ১৫ দিন আগে। একই রকম ভাবে তাঁর বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেনি তৃণমূল। তিন নেতার ক্ষেত্রে দু’রকম অবস্থান কেন? এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। দলের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, পার্থ দলের কাছে বিড়ম্বনা হলেও অনুব্রত বা মানিক তা নন।
সৌগত কেন এমন মনে করছেন? তা-ও বুধবার স্পষ্ট করেছেন দমদমের প্রবীণ সাংসদ। সৌগত বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে স্তূপীকৃত নগদ টাকা উদ্ধার হতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু মানিকের ক্ষেত্রে টাকা পাওয়া যায়নি। অনুব্রতের ক্ষেত্রেও মোটা পরিমাণ টাকা দেখা যায়নি। পার্থের সহযোগীর থেকে যে টাকা মিলেছে, সেটা সবাই দেখেছে। তার পর দল চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বাকিদের ক্ষেত্রে তো ইডি, সিবিআই কিছু নথির কথা বলছে কিন্তু কিছুই তো প্রমাণিত হয়নি।’’
প্রসঙ্গত, পার্থ গ্রেফতার হন ২৩ জুলাই। এর পরে তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা ২৮ জুলাই। একই দিনে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। অভিষেক বলেন, ‘‘তদন্ত যত দিন না শেষ হবে, তত দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন। উনি আইনের চোখে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারলে তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ অন্য দিকে, অনুব্রত গত ১১ অগস্ট এবং মানিক গ্রেফতার হয়েছেন ১১ অক্টোবর। প্রথম জন গরুপাচার তদন্তে এবং দ্বিতীয় জন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে। দু’জনের ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত কোনও দলীয় পদক্ষেপ করা হয়নি।
‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ টাকা উদ্ধার নিয়ে দল যে অস্বস্তিতে তা আগেও স্পষ্ট করেছে তৃণমূল। তার সঙ্গে যে অনুব্রত ও মানিকের তুলনা চলে না, সেটাও বুঝিয়েছে। বুধবার তা আরও স্পষ্ট করে দিলেন সৌগত। পার্থের বিষয়ে আগেও মুখ খুলেছেন সৌগত। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি পার্থকাণ্ডে অস্বস্তিতে থাকা দলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে বলেন, ‘‘সারা ভারতেই এই রকম দুর্নীতির ব্যাপার কম হয়েছে। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ অনেক দিন জেলে ছিলেন। কিন্তু লালুর কাছ থেকে এত নোট তো বার হয়নি। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন সুখরাম। তাঁর ওখান থেকে দু-তিন-চার কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে দেখা গিয়েছে। এই ভাবে তো কোথাও কখনও দেখা যায়নি।’’