আদালতে তোলার পথে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা শিমুলিয়ার ১ পঞ্চায়েত সদস্য সানাউল্লা শেখ ওরফে ডালিমকে খুনের ঘটনায় দু’বছর পরে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
ধৃত লাল্টু শেখ, উজ্জ্বল শেখ ও ঝন্টু শেখের বাড়ি শিমুলিয়া গ্রামেই। সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ কৈচর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। পুলিশের দাবি, এতদিন তারা ভিন্-রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছিল। এ দিন ধৃতদের কাটোয়া আদালতে হাজির করানো হলে চার দিনের সিআইডি হেফাজত হয়। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এফআইআরে ১৫ জনের নাম ছিল।
২০১৭ সালের ১৯ জুন মঙ্গলকোটের নিগনে মাছের আড়তে বসে থাকার সময় গুলিতে খুন হন ডালিম। মাথার দু’পাশে দুটি গুলি লাগে তাঁর। ঘটনার পরের দিনই নিহতের স্ত্রী লাভলি বিবি অভিযোগ করেন, ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন তাঁর স্বামী। স্থানীয় বিধায়ক গোষ্ঠীর বেশ কিছু লোকজন তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে, বলেও দাবি করেন তিনি। স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী ও জেলা পরিষদের সদস্য বিকাশ চৌধুরী-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের দাদা আসাদুল্লা শেখ। বর্তমানে বিকাশ চৌধুরী জেল-হাজতে রয়েছেন।
ওই ঘটনার পরে, মঙ্গলকোটে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। খুনের কয়েকদিন পরে, তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথকে সঙ্গে নিয়ে ডালিমের বাড়িতে গিয়ে দোষীদের দ্রুত ধরার আশ্বাস দেন। দলের মঙ্গলকোটের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলও শিমুলিয়াতে গিয়ে ‘অভিযুক্তেরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন গ্রেফতার হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় পুলিশও তৎপর ভাবে তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতারও হন কয়েকজন। কিন্তু তদন্তে গতি আনার জন্য শাসক দলের ‘চাপ’ থাকায় কিছুদিন পরেই সিআইডি তদন্ত-ভার হাতে নেয়।
এ দিন মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘ডালিম আমাদের দলের শিমুলিয়া ১ অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। সিআইডির উপরে আমাদের আস্থা আছে। একে একে প্রত্যেকেই ধরা পড়ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘সিআইডির কাছে ছোট-বড় বা প্রভাবশালী বলে কিছু নেই।’’ বহু চেষ্টা করেও মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
নিহতের দাদা আসাদুল্লা শেখ বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই চাই দোষীরা দ্রুত সাজা পাক।’’