গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তৃণমূলে সংবিধান সংশোধন করে ‘জাতীয় কার্যনির্বাহী সভাপতি’ পদ তৈরির খবর খারিজ করলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ইংরেজি ওয়েবসাইট ‘দ্য প্রিন্ট’-এ প্রকাশিত ওই খবর প্রসঙ্গে তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘তৃণমূলে কোনও কার্যনির্বাহী সভাপতির পদ তৈরি হচ্ছে না। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। এর আগে দলের তরফে সুখেন্দুশেখর রায় টুইট করে এ কথা বলেছেন। আজ (শনিবার) আবারও বলা হল। দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক (সর্বভারতীয়) অভিষেক।’
ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) সংস্থা ‘আইপ্যাক’ তৃণমূলের সংবিধানে রদবদলের কাজ করছে বলে সূত্রের খবর। ওয়েবসাইট ‘দ্য প্রিন্ট’ ওই খবর দিয়ে দাবি করেছিল, তারা ‘আইপ্যাক’ সূত্রেই তৃণমূলের সংবিধান সংশোধনের খসড়ার বিভিন্ন বিষয় জানতে পেরেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথিও তাদের হেফাজতে রয়েছে। তার ভিত্তিতেই তারা তৃণমূলে কাঠামোগত পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে। যদিও কুণাল শনিবার জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি ভিত্তিহীন।
প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছিল, কার্যনির্বাহী সভাপতি পদের জন্য দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেকই ‘স্বাভাবিক পছন্দ’ হওয়ার সম্ভাবনা। নীলবাড়ির লড়াইয়ে বিপুল জয়ের পরে রাজ্যের গন্ডি ছাড়িয়ে তৃণমূল জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়তা অনেকটাই বাড়িয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস জরুরি হয়ে পড়েছে বলেই ‘দ্য প্রিন্ট’-এ প্রকাশিত ওই খবরে দাবি করা হয়েছিল।
ঘটনাচক্রে, গত বছরের নভেম্বরে মমতা তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকের পর দলের শীর্ষনেতারা জানিয়েছিলেন, দলের সংবিধানে রদবদল আনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিকে-ও। তৃণমূল সূত্রের খবর, সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনীগুলি মূলত তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ের পর তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাক-এর আরও পাঁচ বছরের জন্য নবীকৃত হয়েছে। আইপ্যাক আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করবে।
পিকে-র সংস্থার যে নথি ‘দ্য প্রিন্ট’ পেয়েছে বলে তাদের দাবি, সেখানে ২০০০ সদস্যের জাতীয় পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত ওই পরিষদে দলের সংসদীয় বোর্ড, জাতীয় কর্মসমিতি, জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, জেলা সভাপতি, রাজ্যদলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন, রাজ্য সেল এবং যে সমস্ত জেলায় দলের সংগঠন শক্তিশালী, সেখান থেকে তিনজন করে সদস্য থাকবেন। পরিষদে ৩৩ শতাংশ করে মহিলা এবং তফসিলি জাতি-উপজাতির প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কার্যনির্বাহী সভাপতি পদ সৃষ্টির খবর উড়িয়ে দিলেও অন্য় রদবদলগুলির নিয়ে প্রকাশিত খবরের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি কুণাল।