সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কুণাল। ছবি: সংগৃহীত।
আবারও বামফ্রন্ট জমানাকে কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রবিবার সকালে একটি টুইট করেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ। সেই টুইটে সিপিএমের ৩৪ বছরের সময়কালে দুই মুখ্যমন্ত্রীর জমানাকেই নিশানা করা হয়েছে। কুণাল লিখেছেন, ‘‘বামফ্রন্ট জমানায় ডাক্তারি পড়তে মুখ্যমন্ত্রীর কোটা ছিল। এই কোটা ২০১১-র পর তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম জমানায় মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় ক’জন এবং কারা ডাক্তারি পড়েছিলেন, অধিকাংশই জয়েন্টে না পেয়েও কোটায় ঢোকার অভিযোগ উঠত কেন, সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করুক সিপিএম।’’ সম্প্রতি বাম জমানায় চিরকুটে চাকরি থেকে শুরু করে দলীয় ক্যাডারদের সরকারি চাকরিতে বহাল করা নিয়ে বামফ্রন্ট জমানার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারা। এ বার সরাসরি বামফ্রন্ট সরকারের দুই মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন কুণাল।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে চিরকুটে চাকরি পাওয়ার পাশাপাশি, পরিবারের ১৩ জন সদস্যের সরকারি চাকরি পাওয়ার বিষয়টিও প্রকাশ্যে এনেছিলেন কুণালই। আর সেই অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যেই আবারও সিপিএম মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ডাক্তারিতে ভর্তির ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হলেন তৃণমূল মুখপাত্র।
কুণালের অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘‘একজন জেলফেরত আসামী। অসত্যবাদী ব্যক্তির কোনও কথার জবাব আমরা দেব না।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীদের ডাক্তারি পড়াতে কোটা ছিল। সেটা আমাদের রাজ্যেও ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা উঠে গিয়েছে।’’ উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই সিপিএম নেতৃত্বের প্রতি একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন কুণাল। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষের ২২ লাখ টাকা দামের গাড়ি কেনা নিয়েও নীতিগত প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। জবাব দিয়েছেন শতরূপও। বিষয়টি আর কেবল রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই আটকে নেই। সিপিএমের সদর দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বসে কুণালের আক্রমণের জবাব দিয়েছিলেন শতরূপ। সেই সাংবাদিক বৈঠকে শতরূপের করা মন্তব্যের বিরুদ্ধে তাঁকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন কুণাল। যে হেতু সিপিএমের রাজ্য দফতরে বসে শতরূপ সাংবাদিক বৈঠক করে কুণালকে আক্রমণ করেছিলেন। তাই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকেও আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন তিনি। আইনি নোটিস পেয়ে সিপিএম নেতৃত্বেও জানিয়েছেন, শতরূপের করা মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন না। তাই মানহানির মামলাই দায়ের করুন কুণাল। আর সেই আবহেই সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কুণাল।