প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক স্কুলে টিউবওয়েল বসাতে আসা ঠিকাদারের কাছে তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
চকদিঘি পঞ্চায়েতের চিকনদিঘি প্রাথমিক স্কুলে জলকষ্টের কথা এক প্রশাসনিক রিপোর্টে জেনে, পঞ্চায়েত সমিতি এক ঠিকাদারকে নিয়োগ করে। মঙ্গলবার সেই ঠিকাদার শেখ মারজান আলি বিডিও-কে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে ১০ হাজার টাকা তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতাকে ‘তোলা’ হিসাবে না দিলে, স্কুলে টিউবওয়েল বসানো যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি কাজ বন্ধ করেছেন। ঠিকাদারের বক্তব্য, ‘‘১০ হাজার টাকা তোলা দিতে হলে, কাজ কী করে করব!’’
অভিযুক্ত নেতা তথা পেশায় ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সন’ (ভিআরপি) অভিজিৎ ঘোষ ‘তোলা’ চাওয়ার কথা মানেননি। বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “কমিটি গড়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ ঠিক হলে, এফআইআর করা হবে।’’ তবে চকদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের গৌরসুন্দর মণ্ডল বলেন, “দলের নাম করে এক জন ভিআরপি তোলা চেয়েছে, এই অভিযোগ শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। প্রশাসন যে ব্যবস্থা নেবে, পঞ্চায়েত তা কার্যকর করবে।’’
ওই স্কুলে গিয়ে বুধবার দেখা যায়, টিউবওয়েল বসানোর বাঁশের কাঠামো রয়েছে। মাটি খোঁড়া হয়েছে। শিক্ষকেরা জানান, স্কুলে ৪৩ জন পড়ুয়া। পানীয় জলের অভাবে তাদের যেমন সমস্যা হয়, তেমনই মিড-ডে মিল রান্নাতেও অসুবিধা হয়। প্রশাসনের পরিদর্শনের পরে, সে কথা রিপোর্টে উঠে আসে। টিউবওয়েল বসানোর ব্যবস্থা হয়।
পঞ্চায়েতের হয়ে গ্রামীণ এলাকায় মূলত জনস্বাস্থ্যের কাজ দেখাশোনা করেন ‘ভিআরপি’রা। অভিজিৎ নিজেকে ‘তৃণমূল নেতা’ দাবি করে বলেন, “স্কুলে কল বসানো নিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার ও অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে জানতে গিয়েছিলাম। ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে টাকা-পয়সা চাইনি।’’ স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি বা গ্রামের শিক্ষা-স্বাস্থ্য কমিটির কেউ না হয়ে কোন এক্তিয়ারে তথ্য জানতে গেলেন? অভিজিতের জবাব, “অধিকার আছে বলেই গিয়েছিলাম।’’ বিজেপি নেতা সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “হয়তো কোনও বড় নেতার মদতে তোলাবাজি করতে যান অভিজিৎ!” সে অভিযোগ উড়িয়ে জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন, “কাজটা পঞ্চায়েত সমিতি করাচ্ছে জানার পরেও, অভিজিতের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় অবাক হচ্ছি।’’