ফুলমালায় বরণ দিবাকর
midnapore

শুভেন্দুর খাস লোক! জামিন পেয়েই দাপট

কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকরের বিরুদ্ধে। প্রথমে পালিয়ে বেড়ালেও পরে তিনি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনার পরেই তৃণমূল থেকে ও কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক সংগঠনের পদ থেকে দিবাকরকে সাসপেন্ড করেন জেলা নেতৃত্ব। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪২
Share:

জামিন পাওয়ার পর স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

দল তাঁকে ‘ঝেড়ে’ ফেলেছে। নাম না করে খোদ পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, দিবাকর জানার পাশে নেই তৃণমূল।

Advertisement

মারধরে ধৃত দাপুটে দিবাকর অবশ্য বারবারই আস্থা রেখেছে শুভেন্দুতে। গ্রেফতারের পরেও জানিয়েছিলেন সে কথা। বৃহস্পতিবার জামিন পাওয়ার পরেও বললেন, ‘‘জেলার লোক জানে লালু জানা (দিবাকরের ডাকনাম লালু) শুভেন্দু অধিকারীর একমাত্র খাস লোক।’’ এ দিন দিবাকরকে ফুলের মালা পরিয়ে ‘বরণ’ করে নেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব।

কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকরের বিরুদ্ধে। প্রথমে পালিয়ে বেড়ালেও পরে তিনি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনার পরেই তৃণমূল থেকে ও কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক সংগঠনের পদ থেকে দিবাকরকে সাসপেন্ড করেন জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

১২ দিন জেল হেফাজতে থাকার এ দিন দিবাকরকে তমলুকের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়েছিল। সেখানে বিচারক নিরূপম কর দিবাকরের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেন। দিবাকরকে অভ্যর্থনা জানাতে এ দিন হাজির ছিলেন ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আতিয়ার রহমান, রঘুনাথপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কৌশিক বসু, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উত্তম সাহুর মতো তৃণমূল নেতারা। জামিন পাওয়ার পরেই দিবাকরের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন আতিয়ার। ওই সময় দিবাকরের স্ত্রী তথা জেলা পরিষদের সদস্য তনুশ্রী এবং তাঁদের মেয়েও হাজির ছিলেন।

সপ্তাহ খানেক আগে গ্রেফতারির পরে দিবাকর জানিয়েছিলেন, তিনি তৃণমূল ও শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি আস্থা রেখেছেন। এ দিন জামিন পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আছি, আমাকে দল সাসপেন্ড করলেও পিছন থেকে পুরো টিমকে বলব তৃণমূলকে আগামী পুরসভা এবং বিধানসভা ভোটে জেতানোর জন্য।’’ দিবাকরের স্ত্রী তনুশ্রীও বলেন, ‘‘জামিন হওয়ায় আমরা খুশি। আমরা তৃণমূলের হয়েই কাজ করব।’’

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দিবাকরের প্রতি ‘ক্ষোভ’ এবং তাঁর সাসপেন্ড হওয়ার পরেও আতিয়ারদের দিবাকরকে অভ্যর্থনা জানানোয় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ ব্যাপারে আতিয়ারের বক্তব্য, ‘‘ব্লকে দিবাকরের সঙ্গে কাজ করেছি। কিছু ভুল কাজের জন্য দল ওঁকে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু ওঁর সঙ্গে মেলামেশা না করতে তো নির্দেশ দেয়নি। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ এবং শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বেই চলি।’’

বিরোধীরা অবশ্য আতিয়ারদের এ দিনের পদক্ষেপে তৃণমূলকে বিঁধছে। তাঁদের বক্তব্য, শুভেন্দু যতই মুখে দিবাকরকে বর্জনের কথা বলুন না কেন, পুরভোটে উতরোতে তাঁকে সেই দিবাকরের উপরেই ভরসা করতে হবে। বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নাবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘দিবাকর প্রথম থেকেই বলছেন ওঁর শুভেন্দুর উপরে আস্থা রয়েছে। আর এ দিন তো প্রকাশ্যেই বলেছেন উনি শুভেন্দুর খাস লোক। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে কোলাঘাটের ওই মারধর কার নির্দেশে হয়েছে।’’
দিবাকরকে মালা পরানো এবং মারধরের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘বিষয়টি পুলিশ দেখছে। এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement