ধৃত তাপস দলপতি। নিজস্ব চিত্র।
ভগবানপুরের বিজেপি নেতা চন্দন মাইতি ওরফে শম্ভুকে পিটিয়ে মারার ঘটনার গ্রেফতার করা হল স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস দলপতি। অভিযোগ পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তাপসকে। মঙ্গলবার ধৃতকে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেরার চন্দন খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তাপস। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ মঙ্গলবার বলেন, “মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেদিনের ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার প্রাথমিক স্বীকারোক্তি মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃত তাপস ভগবানপুরের নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী হিংসার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। নিহত চন্দনের উপর আগে একাধিকবার চড়াও হয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়াও চন্দনকে পিটিয়ে মারার পর থেকে গত দু’দিন ধরে এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের তাপস হুমকি দিচ্ছিলেন বলেও বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েকের অভিযোগ।
শনিবার গভীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার মহম্মদপুরে বাড়ি থেকে বিজেপির শক্তিকেন্দ্রের প্রমূখ চন্দন মাইতি ওরফে শম্ভুকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংস ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায় একদল দুষ্কৃতী। রাতে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ভগবানপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় চন্দনের। রবিবার মৃতদেহের ময়না তদন্তের পর মোমবাতি মিছিল করে দেহ বাড়িতে আনা হয়।
রবিবার রাত থেকে সোমবার দেহটি বাড়ির সামনে ফেলে রেখে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এরপরেই সোমবার ভগবানপুর থানায় এলাকার ৩৬ জন তৃণমূল নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন চন্দনের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি মাইতি। সেই অভিযোগ পাওয়ার পর রাতেই তাপসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভগবানপুরে তৃনমূল নেতা অভিজিৎ দাস মঙ্গলবার বলেন ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ তদন্ত করে দোষী ব্যাক্তিদের গ্রেফতার করুক। বিজেপি বেছে বেছে তৃণমূল নেতা ও সরকারি কর্মীদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে।’’ অন্য দিকে, ভগবানপুরের বিজেপি নেতা দেবব্রত কর বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সান্ত্বনা দিতে চাইছে পুলিশ। অন্য দোষীদেরও ধরতে হবে। তারা এখনও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’