বিমানবন্দরে অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব ছবি।
শরীর ভাল নেই অনুব্রত মণ্ডলের। কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি দাবি করেন, তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় তাঁকে একটি বেসরকারি উড়ান সংস্থার বিমানে দিল্লি নিয়ে যাবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার আগে অনুব্রতের দাবি, তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অনুব্রতকে ইনহেলার নিতেও দেখা যায়। তবে ইডি এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সারা। যে হেতু অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে রাত হয়ে যাবে, তাই মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হবে না। দিল্লি পৌঁছে ফের অনুব্রতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। নিয়ে যাওয়া হতে পারে সফদরজং হাসপাতাল বা রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। রাতে দিল্লি পৌঁছে ইডির দফতরেই রাখা হবে বীরভূমের জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে। বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হতে পারে।
মঙ্গলবার সকালে কড়া পুলিশি প্রহরায় আসানসোল জেল থেকে বের করা হয় অনুব্রতকে। এর পর অনুব্রতকে নিয়ে কনভয় রওনা দেয় কলকাতার দিকে। জেল থেকে অনুব্রতকে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ। মাঝে শক্তিগড়ের একটি ধাবায় প্রাতরাশের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও সেই রেস্তরাঁয় তিন ব্যক্তির পৌঁছে যাওয়া এবং প্রায় আধঘণ্টা ধরে নিভৃতে তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতির সঙ্গে তাঁদের কথা বলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
রাস্তার ধারের ওই রেস্তরাঁয় তিনি ঢোকার কিছু ক্ষণ পরেই তিন ব্যক্তিকে তাঁর টেবিলে গিয়ে বসতে দেখা যায়। সবুজ পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তি ছাড়াও বাকি যে দু’জন ছিলেন, তাঁদের এক জনের নাম তুফান মিদ্দা। তিনি অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের গাড়িচালক। তৃতীয় জনের পরনে ছিল কালো ফুল স্লিভ শার্ট। দাবি, তিনি আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি। ওই তিন জনকে অনুব্রতের সঙ্গে জলখাবারে কচুরি, ছোলার ডাল, ল্যাংচা ও রাজভোগ খেতে দেখা গিয়েছে।
এমন বিতর্কিত ঘটনার মধ্যেও তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগে কোনও খামতিই লক্ষ করা যায়নি। অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য সকাল থেকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে শুরু হয় তোড়জোড়। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে জোকার ইএসআই হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন ইডির চার অফিসার। দলে দিল্লির ইডি আধিকারিকও ছিলেন। কেন্দ্রীয় হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, অনুব্রত সুস্থ রয়েছেন। তার পরেই অনুব্রতকে নিয়ে দমদম বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন ইডির আধিকারিকরা।