Anubrata Mandal

Anubrata Mandal: স্বীকারোক্তি দিয়ে কী হবে, প্রশ্ন হিরুর

স্থানীয় গুনিয়া লোকাল কমিটির এই সদস্য এখনও ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিলের ঘটনা ভুলতে পারেননি।

Advertisement

 অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

নলহাটি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৮:২৩
Share:

বাঁ দিকে, মনোনয়ন জমার দিনে। এখন হিরু। নিজস্ব চিত্র।

গত পঞ্চায়েত ভোটে ‘অন্যায়’ করেছিলেন বলে রবিবার ভরা মঞ্চে স্বীকার করেছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু, তা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছেন না নলহাটির ভগবতীপুর গ্রামের সিপিএম কর্মী হিরু লেট। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের আক্রমণে কর্মক্ষমতা হারানো হিরুবাবুর প্রশ্ন, ‘‘এই স্বীকারোক্তি কি আমার স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে?’’

Advertisement

দলের বিজয়া সম্মিলনীতে বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে অনুব্রত বলেন, ‘‘অন্যায় হয়েছে। ভয়ঙ্কর অন্যায় করেছি। এ বার মানুষের রায় নেব। আপনারা পাশে থাকবেন। মানুষ ভোট দেবেন।’’ সোমবার নলহাটি থানার হরিদাসপুর মোড়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ব্যস্ত থাকা হিরু লেট অবশ্য খানিক শ্লেষের সুরেই দাবি করলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। অনুব্রত মণ্ডলদের আবার ভোট নিতে হবে। তাই এখন রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে মুখে ‘অন্যায় করেছি’ বলে স্বীকার করছেন। কিন্তু, পরোক্ষে তিনি অন্য খেলা খেলতে চাইছেন।’’

বছর যাটেকের হিরুবাবু এখনও সিপিএমের সক্রিয় কর্মী। স্থানীয় গুনিয়া লোকাল কমিটির এই সদস্য এখনও ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিলের ঘটনা ভুলতে পারেননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নলহাটি-১ ব্লকের প্রশাসনিক কার্যালয়ে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রার্থীরা। হিরুবাবু বলছিলেন, ‘‘মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জন্য আমরা সেদিন মিছিল করে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলাম। এর জন্য আমাকে লাঠি, বাঁশ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তৃণমূলের গুন্ডারা সারা জীবনের মতো পঙ্গু করে দিয়েছে।’’ এখনও চোখে ভাল দেখতে পান না। ভারী কাজ করতে পারেন না। একটু বেশি পরিশ্রম করলে মাথায় যন্ত্রণা করে। তাঁর কথায়, ‘‘দলের নেতারাই চিকিৎসা করিয়ে আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছেন। আজ তাই অনুব্রত মণ্ডলের মুখে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অন্যায় স্বীকারোক্তি মেনে নেওয়া যায় না।’’

Advertisement

ওই দিনের ঘটনায় হিরু লেটের সঙ্গে জখম হয়েছিলেন সিপিএম নেতা রামচন্দ্র ডোম, গৌতম ঘোষেরাও। জেলার এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েতে আবার ভোট হয়েছে নাকি বীরভূমে? পুরোটাই এক তরফা। এত দিন পরে অন্যায়ের স্বীকারোক্তির তাই কোনও মূল্য নেই।’’ বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভ্রাংশু চৌধুরীর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে না-দেওয়া নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের স্বীকারোক্তি মানে কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওঁরা যে অগণতান্ত্রিক ভাবে জয়ী হয়েছিলেন, সেটার সত্যতা সামনে এল।’’ জেলা সভাপতির স্বীকারোক্তি নিয়ে তৃণমূলের কোনও নেতাই মুখ খুলতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement