TMC

কাজপিছু ৪% কাটমানির ফতোয়া নেতার, নালিশ ঠিকাদারদের

আরামবাগ মহকুমা ঠিকাদার সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণ গত ৮ জানুয়ারি কামারপুকুর চটির সুকান্ত উদ্যান সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে ঠিকাদারদের ডাকেন।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৯
Share:

কাটমানির ফতোয়া নেতার। প্রতীকী ছবি।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের পাশে থাকতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় মমতা ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন, অন্যায় ভাবে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে এবং ক্ষমা চাইতে। এরপরেও হুগলির গোঘাট-২ ব্লকের সদ্যনিযুক্ত তৃণমূল সভাপতি অরুণকুমার কেওড়ার বিরুদ্ধে দলীয় কার্যালয়ে ঠিকাদারদের ডেকে কাজপিছু তাঁকে ৪ শতাংশ করে ‘কাটমানি’ দেওয়ার জন্য ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠল।

Advertisement

শুধু ঠিকাদাররাই ওই অভিযোগ তুলছেন না, দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা গোঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আতাউল হকের অভিযোগ, তাঁকেও ফোন করে ঠিকাদারদের থেকে ওই টাকা তুলে দিতে বলেছেন অরুণ। অরুণ অভিযোগ মানেননি। পেশায় শিক্ষক ওই তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘ঠিকাদারদের সঙ্গে কোনও বৈঠক হয়নি। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে দলটা পরিচালনা করতে চাইছি।’’

দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘দল এ ধরনের কোনও অভিযোগ পেলে সঠিক ভাবে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে প্রত্যেক কর্মীর ক্ষেত্রেই দলের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োজ্য বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

আরামবাগ মহকুমা ঠিকাদার সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণ গত ৮ জানুয়ারি কামারপুকুর চটির সুকান্ত উদ্যান সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে ঠিকাদারদের ডাকেন। মোট ২৭ জন ঠিকাদার হাজির হন। সেখানেই দলের বিভিন্ন কর্মসূচি বা কাজকর্ম চালানোর জন্য অরুণ ওই ফতোয়া দেন বলে অভিযোগ। ঠিকাদারদের তরফে অরুণকে বলা হয়, এখন সব দরপত্র অনলাইনে চূড়ান্ত হওয়ায় কাজ পেতে লভ্যাংশ কম রাখতে হচ্ছে। ফলে, ওই ৪ শতাংশ হারে ‘কমিশন’ তাঁরা দিতে পারবেন না।

এক ঠিকাদার বলেন, “শর্তমতো টাকা না দিলে অরুণবাবু-সহ কয়েকজন ব্যবসা করতে না-দেওয়ার হুমকি দেন। এমনিতেই নানা কর্মসূচিতে টাকা দিতে হচ্ছে। আর পারব না।’’

আতাউলের দাবি, সে দিন ওই বৈঠক থেকেই তাঁকে ফোন করেছিলেন অরুণ। আতাউল বলেন, ‘‘আমি ওঁকে (অরুণকে) বলি, ঠিকাদারদের সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। সব কাজের দরপত্র এখন অনলাইনে হয়। উনি সে সব শুনতে চাননি। টাকা চেয়ে চাপ দেন। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এ রকম পরিস্থিতিতে পড়িনি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার আপত্তি শুনে উনি বিষয়টা জেলা স্তরের নেতাদের জানাবেন বলেও শাসান। আমি বীতশ্রদ্ধ। কাউকে কিছু জানাইনি এখনও। জেলা নেতাদের ভূমিকা দেখে পুরো বিষয়টা রাজ্য স্তরের নেতাদের জানাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement