State News

সাগরের প্রকল্পে ভাঙচুর, শাসক নেতা কাঠগড়ায়

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পেই যে শুধু আঘাত করা হয়েছে, তা নয়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৯
Share:

গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির মন্দিরের কাছে পুকুর সংস্কার ও ফোয়ারা-সহ সৌন্দর্যায়নের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত।

উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। সেই প্রকল্পেই চলল ভাঙচুর! এবং ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এবং তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

৭ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির মন্দিরের কাছে পুকুর সংস্কার ও ফোয়ারা-সহ সৌন্দর্যায়নের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সরোবরের সৌন্দর্যায়নের তালিকায় রয়েছে আলো, গঙ্গামূর্তি, ফোয়ারা, গাছ লাগানো। রয়েছে পেভার ব্লকও। আমজনতার বসার জন্য তৈরি হয়েছে বেঞ্চ। সেই সৌন্দর্যায়নের মূল চালিকাশক্তি আলো। সেই আলো ভাঙা হয়েছে। ওই আলো জ্বালাতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পাতা কেব্‌ল চুরি হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে কেব্‌ল বক্সও। তবে প্রশাসনের অনেকে বলছেন, ‘‘চুরির উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রকল্পটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাঙচুর চালাতেই এ-সব করা হয়েছে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পেই যে শুধু আঘাত করা হয়েছে, তা নয়। গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়নের পর্ষদের (জিবিডিএ) অভিযোগ, প্রায় দেড় বছর ধরে নানা ভাবে সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছে অবৈধ ভাবে বালি চুরি, ম্যানগ্রোভ ধ্বংস, বাঁধ নষ্ট, কর্মীদের মারধর...। সাগরের কে-ওয়ান বাস টার্মিনাসের পরিচালন সংস্থাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রকল্পে ভাঙচুর, বাঁধ নষ্ট, বাস টার্মিনাসে নানা ভাবে সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে বলে জিবিডিএ-র চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তা পৌঁছেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ-প্রশাসন এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরেও। পর্ষদের আধিকারিকদের অভিযোগ, সব ক্ষেত্রেই স্থানীয় পঞ্চায়েত উপপ্রধানের ‘তোলাবাজি’র জন্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পর্ষদ রাজস্ব হারাচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘৃণার রাজনীতির কোনও জায়গা নেই, দিল্লিতে বিজেপির হার নিয়ে বললেন মমতা

সব অভিযোগের নিশানায় রয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘একের পর এক অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি সব ক্ষেত্রেই জড়িত, এটা কি হতে পারে! আইনের পথে তদন্ত চলছে।’’ জিবিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা সাগরের তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা দলগত ভাবে ইতিমধ্যে হরিপদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করেছি।’’

পরিস্থিতির মোকাবিলায় পদক্ষেপ করতে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সুন্দরবন পুলিশ-জেলার এসপি বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘গড়িমসির প্রশ্ন নেই। যে-অভিযোগ জমা পড়েছে, তা খতিয়ে দেখে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। গ্রেফতারও হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পি উলগানাথনও বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। দোষীরা ছাড় পাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement