অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলাকে বিরোধীশূন্য করতে হবে। সরাসরি এমন আহ্বান জানিয়েও দলীয় কর্মীদের সতর্ক করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বুথকর্মীদের নিয়ে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলনে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বুঝিয়ে দেন, জোর করে ভোটে জেতা নয়, গণতান্ত্রিক পথেই জয় চাই। শুধু পঞ্চায়েত নয়, পরের লোকসভা ভোটেও সেই পথেই কর্মীদের হাঁটার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার অভিষেক বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভাবে বিরোধীশূন্য করতে হবে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে সেই কাজ আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করতে হবে। নেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। তাই আমাদের সেই পথে চলেই বিজেপিকে জবাব দিতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের অনেক জায়গাতেই বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ বার যাতে তেমন অভিযোগ না ওঠে সেটাই বৃহস্পতিবার মনে করিয়ে দেন অভিষেক। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে যত আঘাত করছে, ততই দল শক্তিশালী হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাপাধ্যায় যা বলবেন, তা বুথে গিয়ে বাস্তবায়িত করুন। ২০২১ সালের ভোটে হেরে গিয়ে চার জন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে এর জবাব দিতে হবে। চোখে চোখ রেখে লড়াই করে আমরা জবাব দেব। এক হাজার ৭০০ রাজনৈতিক দল আছে ভারতে। কিন্তু এক মাত্র তৃণমূলই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।’’
সম্প্রতি অভিষেক ‘নতুন তৃণমূল’-এর কথা বলছেন। সেই তৃণমূল কেমন হবে তা নিয়েও নানা মহলে জল্পনা চলছে। বৃহস্পতিবার দলের নীতি স্পষ্ট করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই দলে কোনও লবি নেই। একটাই লবি। মমতার লবি। যিনি বুক চিতিয়ে লড়াই করবেন, বলবেন মমতা জিন্দাবাদ, তাঁকে দল সম্মান দেবে।’’ অনেকেই অভিষেককে তৃণমূলের দু’নম্বর বলে উল্লেখ করে। তা নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূলে দুই বা তিন নম্বর বলে কিছু নেই। আমি আপনি সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। মমতার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।’’
অভিষেকের বৃহস্পতিবারের বক্তব্যের বড় অংশ জুড়েই ছিল বিজেপিকে আক্রমণ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি মানুষকে অপমান করছে। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তৃণমূল বস্তির দল। আমরা সে জন্য গর্ব বোধ করি। এই বস্তির দলের কাছে ২০২১ সালের ভোটে হারতে হয়েছে। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে আবার জবাব দেব।’’
বিজেপিকে রাজ্যছাড়া করার ডাকও দিয়েছেন অভিষেক। একই সঙ্গে আবারও আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।