প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে বাগ্যুদ্ধ তৃণমূল-বিজেপির। ফাইল চিত্র।
ডায়মন্ড হারবারে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে শনিবার প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা সত্ত্বেও মার্চ মাসে ফের ডায়মন্ড হারবারে প্রশাসনিক বৈঠক করতে পারেন অভিষেক। রবিবার বিরোধী দলনেতা পর পর কয়েকটি টুইট করেন। মুখ্যসচিবের উদ্দেশে টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যসচিব, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র আছে, না কি কর্তৃত্ববাদী রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে, তা নিয়ে আমি দ্বিধায় আছি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক একটি পর্যালোচনা সভার ব্যবস্থা করেছিলেন ডায়মন্ড হারবার সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার জন্য। পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি সংসদীয় আসন আছে, বাকিগুলোর কী হবে?’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার ছাড়াও, জেলায় আরও ৩টি সংসদীয় কেন্দ্র রয়েছে, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুর। কেন তাদের উপেক্ষা করলেন জেলাশাসক?’’ সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, মুখ্যসচিবের উত্তরের জন্য আগামী ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করবেন। যদি কোনও জবাব না পাওয়া যায়, তা হলে বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করবেন।
যদিও, শনিবার বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই নিজের আগামী পরিকল্পনা বৈঠকে হাজির জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের জানিয়ে দিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেই মতো আগামী মার্চ মাসে আবারও ডায়মন্ড হারবার লোকসভা এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। গত বছর নভেম্বর মাসে ডায়মন্ড হারবারের রবীন্দ্র ভবনে প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন তিনি। আর শনিবার বৈঠক হল বজবজ-২ ব্লকের নোদাখালিতে। গত বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ও নিজের লোকসভা এলাকায় কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আলিপুরের নব প্রশাসনিক ভবনে এক প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। অভিষেকের শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘মার্চ মাসে আবার সাংসদ আমাদের নিয়ে বৈঠক বসবেন। কিন্তু পরে বৈঠকের দিনক্ষণ এবং স্থান জানানো হবে।’’ আর অভিষেকের প্রশাসনিক বৈঠক ঘিরে প্রশ্ন তোলায় বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘‘হাতে টাকা নিয়ে ধরা পড়ার পর গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে তিনি যে দলে গিয়েছেন সেই দলের প্রধানমন্ত্রী কখনও সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। আর সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দেননি। এমন একটি রাজনৈতিক দলের উচিত আমাদের নেত্রীর থেকে জনসেবার পাঠ নেওয়া। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। আর শুভেন্দুবাবু এখন কোনও কিছু না পেয়ে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন। বিজেপির উচিত অভিষেককে দেখে শেখা, যে কী ভাবে মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হয়। সেই বিষয়ের সমালোচনা না করে বিজেপির সাংসদ বিধায়করা অভিষেকের তৈরি করা মডেল অনুসরণ করুন।’’