Abhishek Banerjee

কোর্টের মৌখিক রক্ষাকবচ নিয়ে বুধে ইডির মুখোমুখি হবেন অভিষেক, থাকছেন না ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় সভায়

বুধবার দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী জোটের ‘সমন্বয় কমিটি’র বৈঠক চলার সময়ে কলকাতায় ইডি দফতরে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগের কর্মসূচি তিনি বাতিল করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৫৫
Share:

কলকাতায় ইডি দফতরে বুধবার সকালে হাজিরা দেবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তৃণমূল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। যদিও দলের পক্ষে সাংবাদিক বৈঠকে এই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘উনি (অভিষেক) তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় পান না৷ সেটা আগামিকাল আপনারা দেখে নেবেন।”

Advertisement

মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে যখন ওই সাংবাদিক বৈঠক চলছে, সেই সময় কলকাতা হাই কোর্টেও শাসক শিবিরের জন্য স্বস্তির খবর পাওয়া যায়। প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট তাঁকে জানিয়ে দেয়, নতুন করে কোনও রক্ষাকবচের প্রয়োজন নেই তাঁর। কারণ, ইডি আগেই এ ব্যাপারে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে।

বুধবার দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী জোটের ‘সমন্বয় কমিটি’র বৈঠক। ‘ইন্ডিয়া’র ওই কমিটির সদস্য অভিষেক। কিন্তু তিনি কি সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন? প্রশ্ন উঠেছিল একই দিনে কলকাতায় ইডির দফতরে হাজিরা দিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সমন পাঠানোয়। এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের পদক্ষেপ কী হবে তা মঙ্গলবার দলের পক্ষে স্পষ্ট করা হয়। বিকেলে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক। সেখানেই পার্থ বলেন, “আসলে অভিষেকের শিরদাঁড়া সোজা, শুভেন্দুর মতো শিরদাঁড়া বিক্রি করেননি।’’

Advertisement

তাঁকে যে ইডি আবার তলব করেছে তা নিজেই জানিয়েছিলেন অভিষেক। তিনিই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রবিবার জানান, ‘‘ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে, যে কমিটির আমিও এক জন সদস্য। কিন্তু ইডি ওই দিনই আমাকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে! এই মাত্র সেই নোটিস পেলাম। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কাপুরুষতা ও অন্তঃসারশূন্যতা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারছি না।’’

প্রসঙ্গত, অভিষেককে ইডির তলব নিয়ে সোমবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেককে সারা ক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে ওকে। কোনও প্রমাণ নেই।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘বার বার অভিষেককে নিম্ন আদালত, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ছুটতে হচ্ছে বিচারের জন্য! কী হয়নি ওর বিরুদ্ধে?’’ এর পরে মঙ্গলবার তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক। সেখানে মন্ত্রী শশী এই তলবের পিছনে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের ফলকেও একটা কারণ বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি, অভিষেক এক দিন প্রচারে গিয়েছিলেন। ওই আসন বিজেপি ধরে রাখতে না পারার জন্যই এই তলব। রাজনৈতিক কর্মসূচি নষ্ট করে দিতেই অতীতের মতো বুধবারেও অভিষেককে ডাকা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শশী। তিনি বলেন, ‘‘ধূপগুড়ির হার সহ্য করতে না পেরেই তড়িঘড়ি অভিষেককে আরও এক বার ডাকা হয়েছে।’’

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ধারাবাহিক ভাবে অভিষেককে হেনস্থা করা হচ্ছে। শশী উদাহরণও তুলে ধরেন। জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিষেকের নেতৃত্বে ‘নবজোয়ার যাত্রা’ জনজোয়ারে পরিণত হয়। তার পর থেকেই বিজেপির ‘টার্গেট’ অভিষেক। সে কারণেই অভিষেকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ‘এজেন্ডা’র সময়েই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। অভিষেক একা নন, তাঁর স্ত্রী, শিশু সন্তানদেরও বিজেপির জন্য হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে। বলে দাবি করেন তৃণমূলের মন্ত্রী।

অভিষেক আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি ইডি যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে না পারে, সে ব্যাপারেই আদালতে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করেছিলেন অভিষেক। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানি হয় মামলাটির। আবেদন শোনার পর বিচারপতি জানিয়ে দেন, অভিষেকের এই রক্ষাকবচের কোনও প্রয়োজন নেই। মামলাটি নতুন করে শোনারও কোনও দরকার নেই তাই। অভিষেকের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘ইডির আইনজীবীর মৌখিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ইডির আধিকারিকেরা এই মামলার শুরু থেকে কোনও কড়া পদক্ষেপ করেননি। এখন এই মামলার শেষ মুহূর্তে কেন নতুন শব্দবন্ধ নির্দেশনামায় লিখতে যাব?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement