অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার মুম্বইতে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র সদ্যগঠিত সমন্বয় কমিটির সদস্য হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শনিবার ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারসভা থেকে জোটের তরফে বড়সড় ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। অভিষেক বলেছেন, ‘‘২০২৪ সালে বিজেপি জিতলে গ্যাসের দাম ৩ হাজার টাকা হবে। ইন্ডিয়া জিতলে ৫০০ টাকায় গ্যাস পাওয়া যাবে।’’ ডায়মন্ড হারবারের দু’বারের তৃণমূল সাংসদের এমন ঘোষণাকে ব্যক্তিগত মত হিসাবেই দেখছে কংগ্রেস। আর ‘ইন্ডিয়া’-র অন্যতম শরিক সিপিএম অভিষেকের এমন একতরফা ঘোষণায় বিরক্তিই প্রকাশ করছে।
অভিষেকের এই ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক মহলের একাংশে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি জোটের তরফে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রথম প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূলের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক? কেউ কেউ বলছেন, জোটের ১৩ জনের কো-অর্ডিনেশন (সমন্বয়) কমিটিতে রয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সেই ক্ষমতাবলে তিনি এমন ঘোষণা করতেই পারেন।
আবার অন্য একটি অংশের মতে, বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যে হেতু সমন্বয়ের ভিত্তিতেই সব রকম সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে, সেখানে এই ধরনের ঘোষণা খানিকটা হলেও সমষ্ঠিগত ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। কারণ, জোটে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যদি নিজেদের মর্জিমাফিক ঘোষণা করতে থাকেন, তা হলে আখেরে লাভ হবে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারের। তাই এমন ঘোষণা থেকে জোটের যে কোনও নেতার বিরত থাকা উচিত। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা ওর (অভিষেক) ব্যক্তিগত মতামত। মুম্বইয়ে তো কমিটি গঠন হয়েই গিয়েছে। যে হেতু কমিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে, তাই এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একক ভাবে মত প্রকাশ না করাই ভাল। যে যার মতো কথা বলতে শুরু করলে, তাতে ভাল বার্তা যাবে না। তাই আমার মনে হয়, কমিটির মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে সবার মতামত নিয়েই এই ধরনের কথা বলা উচিত।’’ আর সিপিএমের প্রাক্তন পলিটব্যুরো সদস্য হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘আজকালের ফ্যাশান হয়ে গিয়েছে, আমি দাতা তা প্রমাণ করা। চান্স পেলেই দান করে বেড়াচ্ছে। এমন উদ্ভট কথার কোনও মানে হয় না। তাই এমন কথার কোনও জবাব দেওয়ারও কোনও প্রয়োজন বোধ করি না।’’
মুম্বইতে জোটের বৈঠক শেষে যে সাংবাদিক বৈঠক হয়েছে তাতে তিন দফা যৌথ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রথমত, সমন্বয়ের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘যথাসম্ভব একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু করা। দ্বিতীয়ত, ১৪ সদস্যের সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে যৌথ প্রচার, কৌশল নির্ধারণের মতো বিষয়গুলি চূড়ান্ত করা। তৃতীয়ত, ‘জুড়েগা ভারত, জিতেগা ইন্ডিয়া’ স্লোগান সামনে রেখে দ্রুত রাজ্যে রাজ্যে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জন সমাবেশ এবং প্রচার কর্মসূচি শুরু করা।