Abhishek Banerjee

গ্রামে গেলেন, শুনলেন, তার পর কাঁথির মঞ্চে উঠে পঞ্চায়েতের তিন মাথাকে সরাতে নির্দেশ অভিষেকের

গ্রামবাসীদের খারাপ পরিষেবা দেওয়া নিয়ে অভিযোগ শোনার পর, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৪৯
Share:

মারিশদার গ্রামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

খারাপ পরিষেবা দেওয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনার পর, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কাঁথির সভায় তৈরি হল এমন ছবি। ওই পদাধিকারীরা ইস্তফা না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অভিষেক।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। কাঁথির সভায় যাওয়ার আগে অভিষেক কনভয় থামিয়ে ঢুকে পড়েন মারিশদা এলাকার একটি গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের থেকে জানতে পারেন দুঃখ-দুর্দশার কথা। গ্রামবাসীরাও অভিষেককে কাছে পেয়ে জানান, তাঁদের অনেকে পাকা বাড়ি পাননি। এ ছাড়াও এলাকায় জলকষ্ট এবং নিকাশি নিয়ে সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তাঁরা। অভিষেক সেই সব অভিযোগের কথা মন দিয়ে শোনেন। এর পর কাঁথির সভাস্থলে যাওয়ার পথে অভিষেক খোঁজখবর নেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধান সম্পর্কে। মঞ্চে উঠে কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের মারিশদা ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল এবং অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে ইস্তফা দিতে তিনি নির্দেশ দেন। বলেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারিশদার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের ইস্তফা চাই। না ইস্তফা দিলে আইনি ব্যবস্থা নেব এবং সরকারকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব।’’

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের চিহ্নে জিতব আর বিজেপির দালালি করব? যাঁরা এ সব ভাবছেন তাঁদের সকলের তালিকা আমার কাছে আছে। তাঁদের মেরুদণ্ড কোথায় রাখা আছে আমি জানি। মানুষের কাজ না হলে আমাদের রাজনীতি করে লাভ নেই।’’ আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী হতে গেলে ‘জনতার শংসাপত্র’ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি। চাটুকারিতা করে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া যাবে না বলেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছেন, ভোটে জিতলে সদস্যদের জাতিধর্ম বলে কিছু নেই, সব মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন কি না তা দেখতে হবে।

Advertisement

শনিবার সভার আগে মারিশদার ওই গ্রামে অভিষেক পৌঁছতেই তাঁকে দেখে ছুটে যান মহিলা, শিশু-সহ অনেকে। সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকও শুরু করেন তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতা। অনেকে অভিষেককে অভাব-অভিযোগের কথা বলেন। অভিষেক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘রেশন পান?’’ উপস্থিত জনতা জবাব দেয়, ‘‘আমরা রেশন পাই। কিন্তু অনেক সরকারি ভাতা পাই না।’’ এলাকার নিকাশের সমস্যার কথা তুলে ধরেন এক মহিলা। অভিষেক তাঁকে বলেন, ‘‘চলুন, দেখে আসি।’’ তার পরই ওই মহিলার সঙ্গে ঢুকে পড়েন গ্রামে। গ্রাবমাসীদের সঙ্গে পরবর্তী কালে যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর চেয়ে নেন অভিষেক। সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমি দেখে গেলাম। যা করার করব।’’ এর পর বলেন, ‘‘আমি যখন তখন চলে আসব। এক কাপ চা খেয়ে যাব।’’ পরে মঞ্চে উঠে সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তুলে ধরেন মারিশদার ওই বাসিন্দাদের ‘করুণ’ অবস্থার কথা। পদত্যাগের নির্দেশ দেন তিন জনকে। বছর ঘুরলে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ অভিষেকের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement