অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
গান্ধী জয়ন্তীতে রাজধানীতে তৃণমূলের আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে চাইছে তৃণমূল। তাই সেই কর্মসূচির একদিন আগেই দলের নেতানেত্রীদের দিল্লিতে পৌঁছনোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার দিল্লি গিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবারও নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেখানেই দলের লোকসভার ও রাজ্যসভার সাংসদদের ১ অক্টোবর দিল্লিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক।
মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্যসভার এক সাংসদ বলেন, ‘‘আমাদের সবাইকে ১ অক্টোবর দিল্লিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর নির্দেশ মতোই আমরা রাজধানীতে যাব। পরদিন আমাদের কর্মসূচি হলেও, কীভাবে তা রূপায়িত হবে, তা ওইদিনই আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’’ এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে দিল্লি যেতে হবে তৃণমূলের সাংসদ ছাড়াও বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের। তাঁদের কাছেও ইতিমধ্যে দলের বার্তা পৌঁছে গিয়েছে বলেই খবর। তাঁদেরও ১ অক্টোবর দিল্লিতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এখনও তৃণমূল নেতৃত্ব এই কর্মসূচির অনুমতি পায়নি। তবে বিকল্প কর্মসূচি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে তারা। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের নেতৃত্বে দলের রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা রাজঘাটে গিয়ে প্রার্থনা করবেন। ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁরা লিখিত ভাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের কাছে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন। ২ অক্টোবর রাজঘাটে প্রার্থনা করার পর তাঁরা গিরিরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৫০ লক্ষ চিঠি নিয়ে তাঁরা গ্রামোন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। পশ্চিমবঙ্গে যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করেও অর্থ পাননি, তাঁরাই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠাতে চাইছেন। সেই চিঠির দাবিই গিরিরাজের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ২১ জুলাই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন। ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীতে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা-সহ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দিল্লির রাজপথে সরব হবেন। দিল্লির রামলীলা ময়দানে অবস্থান-বিক্ষোভের পরিকল্পনা ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। কিন্তু দিল্লি পুলিশ তার অনুমতি দেয়নি। অভিযোগের সুরেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘২ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না হবে, এই ছিল আমাদের কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিকে সামনে রেখেই আমাদের তরফ থেকে নিয়মমাফিক একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল দিল্লি পুলিশের কাছে। যেখানে বলা হয়েছিল, ২ অক্টোবর আমাদের মূল কর্মসূচি। বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত রামলীলা ময়দান পাওয়ার আবেদন করেছিলাম।’’ এই নিয়ে এর আগেও দিল্লি পুলিশকে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। শনিবার আবারও চিঠি লিখে দরিয়াগঞ্জ থানার ডিসিপিকে চিঠি দিয়েছেন তিনি।