মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় এখনও ‘শাহজাহান বাহিনী’র প্রতাপে ব্যতিব্যস্ত হয়ে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তৃণমূলেরই ছত্রচ্ছায়ায় নিয়ন্ত্রণহীন এই অংশকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শাসক দলের নেতারাই। ঘোষণা মতো লোকসভা ভোটের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়ার কথা থাকলেও এই অবস্থা চলতে থাকায় কিছুটা অসহায় বোধ করছেন তাঁরা।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির ঘটনাবলিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে অস্ত্র করেছিল বিরোধীরা। নারী নিগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করলেও দল ও রাজ্য প্রশাসনের তদন্তে দেখা গিয়েছিল, জমি-জায়গা ইত্যাদি নিয়ে তৃণমূলের নেতা শাহজাহানের বিরুদ্ধে ওঠা বহু অভিযোগই সত্য। সে সব অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে দুই তরফে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হলেও লোকসভা ভোটে তার ফল পায়নি শাসক দল। বরং, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে প্রায় ৩৯ হাজার ভোটে জেতা সন্দেশখালি বিধানসভা আসনে এ বার ৮ হাজারের মতো ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তারা। তার পরেও বেহাল সাংগঠনিক অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর সন্দেশখালি সফরসূচি চূড়ান্ত হওয়ার আগে এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি উদ্বেগে রেখেছে জেলা তৃণমূলের নেতাদের।
সন্দেশখালি বিধানসভার ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই সাম্প্রতিক আন্দোলনের আঁচ টের পেয়েছে তৃণমূল। তার মধ্যে সরবেড়িয়া, জেলিয়াখালি ও বেড়মজুরের মতো কয়েকটি জায়গায় মানুষের ক্ষোভ বেশি ছিল। পাশাপাশি, শাহজাহানকে জড়িয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা যে তদন্ত শুরু করেছিল, তার আওতায় পড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ। অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন, আবার সেই তদন্ত থেকে দূরে থাকতে দীর্ঘ দিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন অনেকে। জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, ভোটের ঠিক আগে এই অংশের অনেকে ফিরে এসে ফের ‘সক্রিয়’ হয়েছে এবং ভোটের পরে তাদের অনেকে ‘পুরনো মূর্তি’ ধরার চেষ্টা করছে। ফলে, কোনও ভাবেই দলের ভাবমূর্তি বদলের কাজে সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘সর্বোচ্চ স্তর থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা না গেলে এই ক্ষত নতুন করে পেকে
উঠতে পারে।’’
এ সবের মধ্যেই লোকসভা ভোটে বিজেপির পক্ষে কাজ করেছেন, এমন একাংশ ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের নিয়ে শাসক দলের নেতৃত্বের মধ্যেও একটা দ্বিধা কাজ করছে।