ফাইল চিত্র।
ভোটে জয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রথম বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দিতে আসছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজভবন-নবান্নের সঙ্ঘাত কি বিধানসভায় এসে নতুন মাত্রা পাবে? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, তৃণমূল পরিষদীয় দলের অন্দরে। শুক্রবার দুপুরে বিধানসভায় কী হবে? সে দিকেই আপাতত তাকিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহল। কারণ, রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব এখন চরমে।
সম্প্রতি রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়ের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল, বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ যেন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কারণে এ বার বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাই সম্প্রচার সম্ভব নয়।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আগেই তৃণমূল নেতৃত্ব সরব হয়েছিলেন। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর জেলা সফর নিয়ে বাক্যুদ্ধও হয়েছিল ধনখড় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে। এ বার রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের দ্বন্দ্বের আবহেই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দ্বৈরথ শুরু হয়েছে ধনখড়ের।
সম্প্রতি জাতীয় স্তরে স্পিকারদের সম্মেলনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছেই নালিশ করেছেন বিমান। গণপিটুনি-সহ তিনটি বিল আটকে রাখার অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তার পাল্টা বুধবার স্পিকারকে পত্রাঘাত করেন ধনখড়। তিনি লেখেন, ‘স্পিকার নিজেই রাজ্যপাল পদটির অবমাননা করেছেন। বিধানসভায় আমার ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে, যা জরুরি অবস্থার শামিল।’ ধনখড় আরও লেখেন, ‘আপনি সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, রাজভবনে পাঠানো একাধিক বিল ফেরত পাঠানো হয়নি। এই অভিযোগও খুব দুঃখজনক। কারণ রাজ্যপাল কোনও কাজ ফেলে রাখেননি।’ এই প্রসঙ্গে দু’টি বিলের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। একটি ‘ডানলপ ইন্ডিয়া’ ও একটি ‘গণপিটুনি রোধক বিল।’’
অন্য দিকে বৃহস্পতিবার দু’টি ছবি প্রকাশ করে তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় দাবি করেন, দেবাঞ্জনের দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্যের সঙ্গে বহু দিন ধরেই ধনখড়ের যোগাযোগ ছিল। তিনি প্রথম যে ছবিটি সামনে আনেন, তাতে অরবিন্দকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে দেবাঞ্জনের পিছনে। ঠিক তার পরের ছবিতেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যপালের পরিবারের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ওই ব্যক্তি। সুখেন্দুশেখরের অভিযোগ, ‘‘শোনা গিয়েছে, এই দেহরক্ষীর মাধ্যমেই নাকি বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদের বাড়িতে খাম, উপহার পৌঁছে যেত।’’ এমন আক্রমণের পরেও নীরব থেকেছে রাজভবন।
তাই শুক্রবারের অধিবেশন নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। দলের ২০৯ জন বিধায়ককেই হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল।