West Bengal Panchayat Election 2023

কেশপুরে দেড় লক্ষাধিক ভোটে এগিয়ে তৃণমূল

এ বার ভোটের আগেই কেশপুরের ‘দখলে’ নেয় তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩০টিতে ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০৫টি আসনের ২৪৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান ঘাসফুলের প্রার্থীরা।

Advertisement

বরুণ দে

কেশপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ০৭:৪৬
Share:

কেশপুরে বেনজির ‘লিড’ তৃণমমূলের। ছবি: পিটিআই।

২০০১। সে বার বিধানসভায় কেশপুর থেকে সিপিএমের নন্দরানি ডল জিতেছিলেন ১ লক্ষ ৮ হাজার ভোটে। সন্ত্রাস, ছাপ্পা, ভোট লুটের অভিযোগে সে বারে সরব হয়েছিল তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন, ‘কেশপুর, সিপিএমের শেষপুর’। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে ভেঙে গেল সেই ‘রেকর্ড’। পশ্চিম মেদিনীপুরের এই ব্লকে তৃণমূলের ‘লিড’ দাঁড়াল প্রায় ১ লক্ষ ৬৯ হাজার। কেশপুর ব্লকটি কেশপুর বিধানসভার সমান। ফলে বিধানসভা এলাকার নিরিখেও সেই একই ‘লিড’। যা রাজ্যে বেনজির।

Advertisement

ফলে অবাধ ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। কেশপুর থেকে জেলা পরিষদের সিপিএম প্রার্থী মিনহাজুদ্দিন মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘ভোট লুট করেছে তৃণমূল। ছাপ্পা মেরেও জেতা নিশ্চিত নয় বুঝে, গণনায় কারচুপি করেছে।’’ জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী ইব্রাহিম আলিরও দাবি, ‘‘ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে।’’ জেলা পরিষদে জয়ী কেশপুরের ‘দাপুটে’ তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক অবশ্য বলছেন, ‘‘মানুষই তৃণমূলকে জিতিয়েছে।’’

এ বার ভোটের আগেই কেশপুরের ‘দখলে’ নেয় তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩০টিতে ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০৫টি আসনের ২৪৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান ঘাসফুলের প্রার্থীরা। ভোট শেষে দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত সমিতির সব আসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৮ শতাংশ আসনও শাসকেরই দখলে গিয়েছে। আর জেলা পরিষদের তিনটি আসন মিলিয়ে তৃণমূলের ‘লিড’ ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৬১। ৫৮ নম্বর আসনে তৃণমূলের হাবিবা বেগম পেয়েছেন ৬৬,৭২৬টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির মমতা মাহাতো পেয়েছেন ৪,৬৩১টি ভোট। জয়ের ব্যবধান ৬২,০৯৫। ৫৯ নম্বর আসনে তৃণমূলের শ্যামল আচার্য পেয়েছেন ৬৩,৪৮২টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপির সুকেশ সরেন পেয়েছেন ৫,৩৪৮টি ভোট। জয়ের ব্যবধান ৫৮,১৩৪। আর ৬০ নম্বর আসনে তৃণমূলের রফিক পেয়েছেন ৫৭,২১৯টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপির ইব্রাহিম আলি পেয়েছেন ৮,৮৮৭টি ভোট। জয়ের ব্যবধান ৪৮,৩৩২। জেলা পরিষদের এই তিনটি আসন মিলিয়েই কেশপুর ব্লক। এখানে তিনটি আসন মিলিয়ে তৃণমূল পেয়েছে ৯১ শতাংশ ভোট, বিজেপি মাত্র ৯ শতাংশ।

Advertisement

এখানে অলিখিত নিয়ম, সরকার যার, কেশপুর তার। পুরনো দুর্গে সিপিএম এখন ক্ষয়িষ্ণু। বাড়ছে গেরুয়া। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল যেখানে ৫১% ভোট পেয়েছিল, বিজেপি পেয়েছিল সেখানে ৪২% ভোট। সিপিএমের ছিল ৬%। এই একটি ভোট ছাড়া সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলিতে তৃণমূল এখানে লক্ষাধিক ব্যবধানেই এগিয়ে থাকত। এ বারের ফল অবশ্য সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালের উপনির্বাচনে উত্তরবঙ্গের দিনহাটায় তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ জিতেছিলেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটে। কেশপুর তাকেও পিছনে ফেলল।

তৃণমূলের অন্দরেই এখন প্রশ্ন, লোকসভায় বুম্যেরাং হবে না তো? তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি অবশ্য বলছেন, ‘‘এটা আমাদের কাছে প্রত্যাশিতই ছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement