মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
ধর্মতলায় জমায়েত নয়, ‘শহিদ দিবসে’ এ বার ভার্চুয়াল র্যালিই। সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। রাজ্যের সব বুথে শহিদ বেদী বানিয়ে ২১ জুলাই শহিদ স্মরণ করুন, কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কালীঘাট থেকে সে দিন মমতা ভাষণ দেবেন বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত সে ভাষণের সঙ্গে ভার্চুয়ালি জুড়ে যাবেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ দিনের বৈঠকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। সব বিধায়ককে আবার নিজের নিজের এলাকায় ফিরতে হবে, ২০২১-এ আবার ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে — দলকে এই লক্ষ্যে সংকল্পবদ্ধ হতে বলেছেন মমতা।
২০২১-এর নির্বাচনের আগে এ বারই শেষ ২১ জুলাই পালন করতে চলেছে তৃণমূল। করোনা পরিস্থিতিতে জমায়েত সম্ভব নয়। সে কথা মাথায় রেখেই এ বার দলের তরফে ভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্থির হয়েছে, রাজ্যের প্রতি বুথে তৈরি করা হবে অস্থায়ী শহিদ বেদী। সেখানে দুপুর ১টা থেকে ২টোর মধ্যে শোকজ্ঞাপন, মাল্যদান এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দলীয় বিধায়ক এবং সাংসদদের যতগুলি বুথে সম্ভব পৌঁছনর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পর, দুপুর ২টো নাগাদ কালীঘাট থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে দল। তবে ধর্মতলায় প্রত্যেক বার যেখানে সমাবেশ মঞ্চ বাঁধা হয় সেখানেও শহিদ বেদী তৈরি করা হবে। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই নিহত ১৩ জনের উদ্দেশে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে সেখানে।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব, জেলাস্তরের নেতারা, দলীয় বিধায়ক, সাংসদ এবং অন্যান্য নেতারা। সকলকেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। করোনা এবং লকডাউনের মধ্যেও সামাজিক দূরত্ব মেনে দলীয় কর্মসূচি চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। বৈঠকে সে কথা মনে করিয়ে দেন দলনেত্রী। তাঁর মতে, বিজেপি নেতারা রাস্তায় নেমে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। উল্টো দিকে দলের নেতারা কেন ঘরে চুপচাপ বসে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। বিজেপির মোকাবিলায় দলীয় নেতা-কর্মীদেরও পাল্টা সুর চড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জনবিরোধী কার্যকলাপ’ নিয়ে প্রতিবাদে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কোন কোন ইস্যু জন সাধারণের সামনে তুলে ধরতে হবে তারও গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছেন দলনেত্রী। রেল ও কয়লার বেসরকারিকরণ, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে প্রতি বুথে প্রতিবাদ সংগঠিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে ৬ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে চলেছে তৃণমূল। এ ক্ষেত্রে দলীয় বিধায়কদের কাঁধে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা মোদীর
জাতীয় স্তরের নানা ইস্যুর সঙ্গেই এ দিনের বৈঠকে উঠে আসে চিন প্রসঙ্গও। তা নিয়ে অবশ্য দলীয় নেতাদের মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থির হয়েছে, চিন নিয়ে দলের অবস্থান তিনি নিজেই জানাবেন। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা। কেউ দলকে বদনাম করার চেষ্টা করলে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয়।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত লকেট, নিজেই জানালেন টুইট করে