ভাঙনের আশঙ্কায় কর্মচারী সংগঠন

পোস্টাল ব্যালটের ভোটে সরকারি কর্মচারীদের তৃণমূল বিরোধিতা স্পষ্ট হয়েছে। শুধু তাই নয়, তার সিংহভাগই গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

বাম আমলে রাজ্য সরকারকে ঘিরে সুরক্ষার প্রাচীর তৈরি করেছিল কো অর্ডিনেশন কমিটি। কিন্তু গত আট বছরে ছন্নছাড়া হয়ে পড়ল তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী সংগঠন। সরকারের পাশে দাঁড়ানো দূরে থাক, কর্মচারীদের ভোট ধরে রাখতেই ব্যর্থ হয়েছে তারা। শাসকদলের সমর্থক কর্মচারী ফেডারেশনের সংকটমুক্তির পথ খুঁজতে আগামিকাল সোমবার বৈঠকে বসছেন দলীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

পোস্টাল ব্যালটের ভোটে সরকারি কর্মচারীদের তৃণমূল বিরোধিতা স্পষ্ট হয়েছে। শুধু তাই নয়, তার সিংহভাগই গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী ফেডারেশনের অন্যতম আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায়ের কথায়, ‘‘নানা কারণে আমরা ভোট কম পেয়েছি। এই সমর্থন ফেরাতে সব স্তরে আলোচনা শুরু করছি।’’ অন্য এক নেতার কথায়, ‘‘পে কমিশন ও মহার্ঘভাতার মতো প্রাপ্য নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিলই। আমরা গত দু’তিন বছরে তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারিনি। এ বারের ভোটে তৃণমূল সম্পর্কে সেই অসন্তোষ স্পষ্ট হয়েছে।" গত ১০ বছরে সদস্য সংখ্যা বেড়েছে তৃণমূলপন্থী সংগঠনের। তবে সংগঠনের একাংশের মতে, তাঁদের বেশিরভাগই বদলি ও অন্যান্য সুবিধা পেতে তৃণমূলপন্থী হয়েছেন। পোস্টাল ব্যালটে দেখা গিয়েছে, চারটি আসন কেন্দ্র ছাড়া এবার তা বিরুদ্ধে গিয়েছে। বেশিরভাগ জায়গায় কর্মচারী ভোটের সিংহভাগ বিজেপি পেয়েছে। তৃণমূল বিরোধিতা আরও স্পষ্ট হয়েছে কংগ্রেসের হাতে থাকা বহরমপুরে তা কংগ্রেস পাওয়ায়। যে ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতেছে, অল্প হলেও সেখানে পোস্টাল ব্যালটে এগিয়ে বিজেপি। একইভাবে যাদবপুরে রেকর্ড ব্যবধানে জিতেও পোস্টাল ব্যালটে বিজেপির কাছে পিছিয়ে তৃণমূল।

বাম জমানায় সরকারের নীতি নির্ধারন ও তা রূপায়ণেও সেই কো অর্ডিনেশন কমিটির ভুমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কর্মচারীদের দাবিদাওয়া নিয়ে নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ‘স্বাধীনতা’ কর্মচারীদের অনেক কাছাকাছি রেখেছিল। ফেডারেশনের একাংশের মতে, তৃণমূল সরকারে তাদের কোনও ভুমিকা নেই। ফলে কর্মচারীদের উপর তাদের প্রভাব বা নিয়ন্ত্রন তৈরি হয়নি।”

Advertisement

ফল প্রকাশের পরে গত তিন চারদিনে বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূল সমর্থক কর্মচারী সংগঠনে ক্ষয়ের বার্তাও আসছে। ইতিমধ্যেই সংগঠনের তরফে দলীয় নেতৃত্বকে তা জানানোও হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিশ্চয় দূর্বলতা আছে। সংগঠনের নেতারা খোঁজ খবর করে দলকে জানাবেন। তার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ এত দিন কর্মচারী সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ভোটের পরে তা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement