বিতর্ক আসানসোলের শীতলাডাঙা এলাকার এই নির্মাণকে ঘিরেই। ইনসেটে পুরসভার বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র
অনুমতি ছাড়া দিন পনেরো ধরে পাকা নির্মাণ তোলা হচ্ছে, পুরসভায় অভিযোগ করেছিলেন এলাকাবাসীর একাংশ। আসানসোলের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শীতলাডাঙা ইকবাল সেতু লাগোয়া এলাকায় দলের একটি কার্যালয় তৈরিতেই ওই নির্মাণ চলছিল বলে দাবি এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা সেই কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের স্থানীয় নেতারা।
কাজ বন্ধের জন্য শুক্রবার পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়ের সই করা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, পুরসভায় নকশা জমা না দিয়ে, অনুমতি না নিয়ে নির্মাণকাজ হচ্ছে। দুই নির্মাণকারী ইমরান খান এবং মহম্মদ রিয়াজকে সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পুরসভায় দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এলাকায় দু’জনই তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। ওই দুই ‘নির্মাণকারী’ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, তৃণমূলের আসানসোল ২ ব্লক সভাপতি উৎপল সিংহ দাবি করেন, ‘‘জায়গাটি সরকারি জমি। নেতা-কর্মীদের আর্থিক সাহায্যে দলের একটি কার্যালয় তৈরি করা হচ্ছিল। ইচ্ছে করে তাতে বাধা দিয়েছে পুরসভা।’’ কী ভাবে গাড়ুই নদীর পাড়ে ওই ‘সরকারি জমি’তে দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে, এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি উৎপলবাবু।
পুরসভার ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা গোলাম সরওয়ার অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুরসভা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। নির্মাণকারীদের কাগজপত্র নিয়ে পুরসভায় দেখা করা উচিত।’’ ওই এলাকা আজ, সোমবার পরিদর্শন করা হবে বলে জানান ইঞ্জিনিয়ার অনির্বাণবাবু।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে জমি-দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকায় আগেও একাধিক সরকারি জমি তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বিক্রি করেছেন।’’ সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘অবৈধ জমি কেনাবেচায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে জড়িত, তা আবার প্রমাণ হল।’’ জমি-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর ভি শিবদাসন। দলের জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও মন্তব্য করব না।’’