গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
বিজেপিতে চলে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে ফিরতে পারেন, এমন জল্পনাও রাজনৈতিক মহলে দীর্ঘ দিনের। ফেরার জন্য শোভন শিবিরের অন্যতম শর্ত ছিল, রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দলের কাজকর্ম থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে। কিন্তু তৃণমূলে রত্নার গুরুত্ব উত্তরোত্তর বেড়েছে। পুরভোটের মুখে রত্না দায়িত্ব পেলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পূর্বের। শনিবার দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিধায়ক নিষ্ক্রিয় থাকলেও দল নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।’’ রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জন্য তৃণমূলের দরজা যে পুরোপুরি বন্ধ, শনিবার কার্যত সেই বার্তাই দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব।
গত বছরের ১৪ অগস্ট শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার আগে থেকেই অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা কখনও থিতিয়ে যায়নি। কিন্তু গোড়া থেকেই শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল নেতৃত্বকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, রত্না চট্টোপাধ্যায় দলের কাজে হস্তক্ষেপ করলে তাঁরা দলে ফিরবেন না।
কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব সেই বার্তাকে কার্যত গুরুত্ব দেননি। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদানের কিছু দিনের মধ্যেই বেহালা এলাকায় কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাজকর্ম দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। এই ওয়ার্ড থেকেই দীর্ঘ দিন ধরে জিতেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে মেয়র পারিষদ বা তৃণমূলের নেতারা রত্না ডাকলেই ছুটে গিয়েছেন বেহালায়। তৃণমূল নেতৃত্বও বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, শোভন-বৈশাখীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না। দলে রত্নার গুরুত্ব বেড়েছে বই কমেনি।
আরও পডু়ন: মেয়রের ঘরই দলীয় অফিস! দলবদল প্রশাসনিক ভবনে, বিতর্কে ববি
আরও পডু়ন: ইস্তফা নয়, কাজ চালিয়ে যান, রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্যকে বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর
পুরসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা এখন কার্যত সময়ের অপেক্ষা। এমন সময়ে তৃণমূলে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের গুরুত্ব আরও বাড়ালেন দলীয় নেতৃত্ব। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ড থেকে বাড়িয়ে পুরো বেহালা পূর্ব বিধানসভা এলাকারই সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁকে। শনিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বেহালা পূর্ব বিধানসভা এলাকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করবেন রত্না চট্টাপাধ্যায়।’’
এর পরেই শোভনের উদ্দেশে তৃণমূল মহাসচিবের খোঁচা, ‘‘এলাকার বিধায়ক দীর্ঘ দিন ধরে নিষ্ক্রিয়। কিন্তু দল তো আর দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।’’ শোভনের ‘দাবি’কে গুরুত্ব না দেওয়া এবং ক্রমেই রত্নার গুরুত্ব বাড়িয়ে বার্তাটা ছিলই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এ দিনের বক্তব্য আরও সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট।