শাসক দলের সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভার মঞ্চে চটুল গানের সঙ্গে নাচ। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
মাইকে বাজছে চটুল ভোজপুরি গান। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মঞ্চে নাচছেন স্বল্প পোশাকের দুই তরুণী। মঞ্চের নীচে দিকে লাগানো রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের লম্বা ব্যানার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সেই ব্যানারে ইংরেজিতে লেখা, ‘নো সিএএ, নো এনআরসি।’ ব্যানারের তলায় আয়োজক হিসাবে দুই তৃণমূল নেতা বুলবুল খান এবং আশরাফুল হকের নাম রয়েছে! ভাইরাল হওয়া এমন এক ভিডিয়ো ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখা হয়েছে, শাসক দলের সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভার মঞ্চে চটুল গানের সঙ্গে নাচ! দাবি করা হয়েছে, ভিডিয়োটি হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লকের। আর সেই ভিডিয়ো নিয়ে রীতি মতো অস্বস্তিতে মালদহ জেলা তৃণমূল। শাসক দলের জেলা নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন গোটা বিষয়টি নিয়ে। কারণ, ওই ব্যানারে যে তৃণমূল নেতাদের নাম লেখা রয়েছে তাঁরা দু’জনেই হরিশ্চন্দ্রপুরের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত।
বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টার পর সোমবার বিকেলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় বুলবুল খানের সঙ্গে। তিনি মালদহ জেলা যুব তৃণমূলে সহ সভাপতি। হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই নেতার দাবি, গোটাটাই সাজানো। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরের মতো এ বছরও ৩ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হরিশ্চন্দ্রপুরে বিশ্বনাথ ঝাঁ স্মৃতি টোয়েন্টি টোয়েন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। আয়োজক ক্ষিতিমোহন সেন স্পোর্টিং ক্লাব। ভিডিয়োতে যে মঞ্চ দেখা যাচ্ছে সেটা ওই ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ফাইনালের দিনের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ।’’ ওই তৃণমূল নেতার দাবি, ১০ ফেব্রুয়ারি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর ক্লাবের উদ্যোগে নাচ-গান হয়েছিল। তারই ছবি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধনখড়ের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠকে মমতা, সঙ্ঘাতের আঁচ কমার ইঙ্গিত টুইটে
তা হলে মঞ্চের নীচে লাগানো দলীয় ব্যানার এল কোথা থেকে? ওই তৃণমূল নেতার সাফাই, ‘‘খেলা চলাকালীন প্রতি দিন আধ ঘণ্টার সিএএ, এনআরসি বিরোধী প্রচার অনুষ্ঠান করা হত মাঠে। তাই গোটা মাঠেই লাগানো ছিল ওই ব্যানার।’’ বুলবুল আরও বলেন, ‘‘ওই ব্যানারই হয়তো কেউ খুলে লাগিয়ে দিয়েছে মঞ্চের নীচের দিকে।’’ তাঁর অভিযোগ, গোটা ঘটনার পিছনে আসাউদ্দিন ওয়াইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম)-এর যড়যন্ত্র আছে। বুলবুল বলেন, ‘‘স্থানীয় এক মিম নেতার ছেলে সহিদুল ইসলাম ওই ভিডিয়োটা ভুল তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। আমরা সহিদুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করছি।”
আরও পড়ুন: বক্সার ফরেস্ট গাইডকে নিয়ে কোনও বই লিখছেন না, জানালেন রোলিং
যদিও বুলবুলের ওই সাফাইয়ের পরেও জেলা তৃণমূলের নেতাদের অস্বস্তি কাটছে না। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই এখনও ওটা তৃণমূলের এনআরসি বিরোধী প্রচারের মঞ্চ হিসাবেই মনে করছেন।