—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দল পরিচালনায় পুরনো পর্যবেক্ষক ব্যবস্থা ফেরাতে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের পর যে সাংগঠনিক সংস্কারের ভাবনা রয়েছে তাতে এই নজরদারির ভার দেওয়া হতে পারে রাজ্য নেতাদের। কাজের সুবিধার জন্য আরও কয়েকটি জেলা কমিটি ভেঙে ছোট করা হতে পারে। তবে দলীয় সূত্রের খবর, এ বিষয়ে এখনও ‘নেতিবাচক’ অবস্থানেই রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলে বড় রকমের সংস্কারের কথা আগেই ঘোষণা করেছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের পর্যালোচনার ভিত্তিতে এই রদবদলে পর্যবেক্ষক ব্যবস্থা ফেরানো হতে পারে। সর্বত্র না হলেও গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ জেলায় রাজ্য নেতাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। এক বা একাধিক রাজ্য
নেতাকে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে জেলা সংগঠনের সমন্বয়ে এই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এই সিদ্ধান্তের নানা দিক নিয়ে দলের অন্দরে অবশ্য আলোচনা চলছে। সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টনের সময়ে বিষয়টি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হতে পারে।
২০২১ সাল পর্যন্ত তৃণমূলে এই পর্যবেক্ষক ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ওই বছর বিধানসভা ভোটের পর তা তুলে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে দলের পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। দল পরিচালনায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং প্রকাশ্যেই কলকাতা থেকে আসা পর্যবেক্ষকদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ‘ব্যক্তিগত স্বার্থের সম্পর্ক’ তৈরি হয় বলেও দলে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। তবে তার পরও মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসের মতো দু’তিন জন নেতা কয়েকটি জেলার সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। একুশে জুলাই-এর সভায় অভিষেকের ‘নবীন-প্রবীণ’ সমন্বয়ের ঘোষণা দলে পর্যবেক্ষক ব্যবস্থা নিয়ে চর্চা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের পর সেই ব্যবস্থা আবার চালু করা নিয়ে কথা শুরু হয়েছে। তবে ঠিক কী ভাবে এবং কতটা তা কার্যকর হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এই সাংগঠনিক কাঠামো নির্ভর করছে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের উপরে।’’ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমেও সেই দায়িত্ব ফিরহাদ হাকিমের। এ কথা উল্লেখ করে তাঁর সংযোজন, ‘‘লোকসভা ভোটে মলয় ঘটক, সমীর চক্রবর্তী, জয়প্রকাশ মজুমদার, আশিস চক্রবর্তীরা সে কাজ করেছেন। সদ্যসমাপ্ত চারটি উপনির্বাচনেও এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সব্যসাচী দত্ত, কুণাল ঘোষ, পার্থ ভৌমিকদের।’’ দুই ভোটের গণনায়ও এ ভাবেই নজর রেখেছিল তৃণমূল।