অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
উপদলীয় কাজের অভিযোগে দুই শিক্ষক নেতাকে বহিষ্কার করল তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের এক জন দলের অধ্যাপক সংগঠনের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল ও অন্য জন মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি প্রীতম হালদার। দলে নবীন ও প্রবীণ শিবিরের টানাপড়েনের মধ্যে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই পদক্ষেপে সাংগঠনিক বার্তাই দেখেছন তৃণমূল নেতারা।
প্রাক্তন ও বর্তমান, দুই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ব্রাত্য বসুর ‘ঘনিষ্ঠ’ মণিশঙ্কর তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন। পার্থের আমলে সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরে তিনি ব্রাত্যের সভাপতিত্বে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সহ-সভাপতি হন। সেই মণিশঙ্করের বিরুদ্ধেই সম্প্রতি গুরুতর উপদলীয় কাজের অভিযোগ পৌঁছয় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তার পরেই শুক্রবার তাঁকে দল ও দলীয় সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। উপদলীয় অভিযোগ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট করে মণিশঙ্কর এ দিন বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরকারে যুক্ত করার কথা বলেছিলাম বলেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এখনও তা-ই বলছি!’’ দলের ভিতরে ও বাইরে নিজেকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই দাবি করে থাকেন তিনি। দলের সিদ্ধান্তের পরে মণিশঙ্করের আরও অভিযোগ, অভিষেকের পক্ষ নেওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন! শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, ‘‘ডাহা মিথ্যার কোনও জবাব হয় না!’’
দলীয় সূত্রে খবর, নবীন-প্রবীণের টানাপড়েনের মধ্যে বারবারই নিজের অবস্থান প্রকাশ্যে এনেছেন মণিশঙ্কর। অভিষেককে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে উল্লেখ করে কলকাতায় বড় বড় ফ্লেক্স দিয়ে ‘নজরে’ এসেছিলেন তিনি। সম্প্রতি শাসক শিবিরে অভিষেকের ‘নেতৃত্ব’ চেয়েও সমাজমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। সব শেষে রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে অভিষেকেরই আপ্ত-সহায়কের সঙ্গে বৈঠক করে দলীয় নেতৃত্বের শাস্তি কোপে পড়তে হল তাঁকে। বিষয়টি নজরে আসার পরেই অসন্তুষ্ট শিক্ষামন্ত্রী তথা ওয়েবকুপার সভাপতি তাঁকে ওই ‘পোস্ট’ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সে কথায় কান দেননি মণিশঙ্কর। তার পরেই এ দিন বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ স্তরে আলোচনার পরে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। একই ভাবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শাস্তির মুখে পড়েছেন প্রীতম।
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ড্লে এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লিখেছেন, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণেই সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অনুমতিক্রমে দলের শিক্ষা সেলের প্রধান হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনও ঘটনার সম্পর্ক নেই’।