(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ, সোমনাথ শ্যাম (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
শুক্রবার সকালে হামলার সময় তিনি বাড়ির দোতলায় ঘুমোচ্ছিলেন বলে দাবি করলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘হইহল্লার আওয়াজ পেয়ে আমি নীচে নেমে এসেছিলাম। তখন দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে।’’ ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা নমিত সিংহ এবং তাঁর ২০-২৫ জন সঙ্গী মিলে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা অর্জুন।
যদিও জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম সরাসরি অর্জুনের অভিযোগ খারিজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অর্জুন নিজে গুলি ছুড়েছেন। ওঁর লোকেরা পিছন থেকে বোমা ছুড়েছে। হয়তো সেই বোমাতেই আঘাত পেয়েছেন।’’ কিন্তু অর্জুনের নিশানায় কে বা কারা ছিলেন? সোমনাথের দাবি, ‘‘অর্জুনের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তাই মরিয়া হয়ে এ সব করছেন। আর কখনও নমিত সিংহ, কখনও সোমনাথ শ্যামের উপর দায় চাপাচ্ছেন।’’
শুক্রবার সকালে অর্জুনের ভাটপাড়ার বাড়ি ‘মজদুর ভবনে’ ইট-বোমা-গুলি নিয়ে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে জগদ্দলের মেঘনা মোড় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় শুক্রবার সকালে। অর্জুন জানিয়েছেন, বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত লেগেছে তাঁর পায়ে। পুলিশের সামনেই নিরাপত্তারক্ষী এবং কর্মীদের উপর ইট, বোমা ছোড়া হয় বলে অর্জুনের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘২০-২৫ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁদের সামনেই বোমা ছোড়া হয়। কয়েক জন পুলিশকর্মীকেও হামলাকারীরা ধাক্কাধাক্কি করেছে।’’ এমনকি, চলে যাওয়ার সময় নমিত এবং তাঁর দলবল গুলি ছোড়ে বলেও প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালেও অর্জুনের বাড়ি মজদুর ভবনে হামলা, বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিল এনআইএ! বিজেপি নেতা অর্জুনের অভিযোগ ছিল, ভবানীপুরের উপনির্বাচনে দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালনের কারণেই ওই হামলা হয়েছিল। ওই উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার অর্জুন বলেন, ‘‘নমিতের সঙ্গে এনআইএ মামলার কয়েক জন আসামিও আজ আমার বাড়িতে হামলা চালায়।’’
একদা কংগ্রেস নেতা অর্জুন তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০১ থেকে টানা চারটি বিধানসভা ভোটে ভাটপাড়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ব্যারাকপুরে দাঁড়িয়ে জয়ীও হন তিনি। কিন্তু তিন বছর দু’মাস পরে ২০২২ সালে মে মাসে আবার তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এ বারের লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে আবার অর্জুন বিজেপিতে ফিরে গিয়েছিলেন। যদিও বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েও জিততে পারেননি ব্যারাকপুরে।