দলেরই এক বর্ষীয়ান কর্মীকে জুতোপেটা করা এবং নাকখত দেওয়ানোর অভিযোগ ওঠায় শ্রীরামপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর ঝুম মুখোপাধ্যায়কে সোমবার সাসপেন্ড করল দল। সুজিত ভট্টাচার্য নামে নিগৃহীত ওই তৃণমূল কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঝুমদেবী তাঁর আত্মীয়ও হন। তাঁর স্বামী রাজা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সুজিতবাবু শ্রীরামপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ঝুমদেবী ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর। দলের গোষ্ঠী-রাজনীতিতে সুজিতবাবু ওই কাউন্সিলরের বিপক্ষ শিবিরের বলে পরিচিত। সুজিতবাবু জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি শহরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউয়ে একটি গুমটির সামনে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় ঝুমদেবী এবং তাঁর স্বামী রাজা দলবল নিয়ে চড়াও হন। তাঁকে জোর করে একটি মোটরবাইকে চাপিয়ে রাধাবল্লভ মন্দিরের কাছে ঝুমদেবীদের বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে নিগ্রহ করা হয়। কিন্তু কেন?
সুজিতবাবুর দাবি, ‘‘শ্রীরামপুর কলেজের ছাত্রভোটে দলের দু’টো পক্ষ হয়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে আমি ঝুমকে গালিগালাজ করেছি, এই মিথ্যা অভিযোগ তুলে ঝুম প্রথমে আমাকে জুতো খুলে মারে। পরে কলেজের কাছে নিয়ে গিয়েও মারা হয়। নাকখত দিতে বাধ্য করানো হয়। রাজা লাথি মারছিল। ওঁদের অনুগামীরাও মারে।’’ সুজিতবাবুর মেয়ে শ্রীজিতা থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ জানায়, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার কথা সোমবার চাউর হতেই তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল পড়ে যায়। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ নিয়ে দলের তরফে হুগলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আলোচনা করেন। তার পরেই ঝুমদেবীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে ঝুম মুখোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। দলে থেকে কেউ যদি মনে করেন বলবান হয়ে গিয়েছেন, সেটা ঠিক নয়।’’
সাসপেন্ড হওয়ার খবর পেয়েই ঝুমদেবী মুষড়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যে কোনও নির্দেশ মেনে চলব। দল তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত নেবে, মাথা পেতে নেব।’’ তবে, সুজিতবাবুকে মারধরের অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন ঝুমদেবীর স্বামী রাজা। তিনি বলেন, ‘‘উনি ঝুমের হাতে ধাক্কা মারেন। তার পরে ভুল স্বীকার করেন। নিজের ইচ্ছেতেই নাকখত দেন।’’