—ফাইল চিত্র
দলের সাংগঠনিক রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতির ঠান্ডা লড়াই এ বার চরম আকার নিল বাঁকুড়ার ওন্দায়। পরিস্থিতি এমন হল যে, ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির প্রচারে একই জায়গা থেকে নিজের নিজের অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে পৃথক মিছিল করলেন প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ খাঁ ও তৃণমূলের ওন্দা ব্লক সভাপতি উত্তমকুমার বিট। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে হওয়া তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মিছিল থেকে একে অপরকে কটাক্ষ করে উঠল স্লোগানও। ওন্দা চৌরাস্তা মোড়ের কাছে মিছিল দু’টি মুখোমুখি হলে দফায় দফায় উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে ওন্দা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয়।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে থেকেই উত্তমের সঙ্গে অরূপের সংঘাত। দলের ২১ জুলাই কর্মসূচি নিয়ে দুই শিবির আলাদা ভাবে বৈঠকও করে। এর পরেই শুক্রবার মিছিলের আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টার খানিক পরে ওন্দা ব্লকের বিডিও অফিস মোড় থেকে অনুগামীদের নিয়ে মিছিল শুরু করেন অরূপ। তার ঠিক ৫ মিনিটের মাথায় বিডিও অফিস মোড় থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি বেসরকারি লজের সামনে থেকে অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল শুরু করেন উত্তম। চৌরাস্তা মোড়ের কাছে দু’টি মিছিল মুখোমুখি হতেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা একে অপরকে লক্ষ্য করে ‘চোর, চোর, দূর হঠো’ স্লোগান দিতে থাকে।
অরূপ বলেন, ‘‘আমি প্রতি বছরই ওন্দায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি মিছিল করি। এ বারও কর্মীরা চেয়েছিল, তাই মিছিল করলাম। কেউ আলাদা মিছিল করে থাকলে তা করতেই পারে।’’ ‘বিরোধী গোষ্ঠী’র মিছিল থেকে ওঠা স্লোগান নিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, ‘‘এই স্লোগান কোনও তৃণমূল কর্মী দেয়নি। অন্যের শেখানো স্লোগান দিয়েছে কেউ কেউ। এই বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমরা প্রত্যেক তৃণমূল কর্মী একত্রিত ভাবে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে নেমেছি।’’ অন্য দিকে, উত্তম বলেন, ‘‘যে ভাবে দু’টি পৃথক মিছিল হল, তাতে আমাদের দলের অন্দরের দ্বন্দই প্রকাশ পাচ্ছে। আমি দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ব্যক্তিগত ভাবে অরূপ খাঁকে ফোন করে দলের পক্ষ থেকে একত্রিত ভাবে একটি মিছিল করার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি সেই অনুরোধে কান দেননি। কেন তিনি পৃথক মিছিল করলেন, জানি না। এতে দলের কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। কেউ অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করলে দলের কর্মীদের সংযত রাখাও কঠিন।’’
এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা বলেন, ‘‘ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোলের বহিঃপ্রকাশ। চুরি আর লুটের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা হলে কে বেশি পাবে, তা নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির সঙ্গে প্রাক্তন বিধায়কের টানাপড়েন চলছে। তার জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে।’’