ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা মহাজাতি সদনে ‘তিলোত্তমা মঞ্চে’। —নিজস্ব চিত্র।
পর্দার আড়ালে থাকা সব অপরাধীর শাস্তি এবং ন্যায়-বিচারের দাবিতে যে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস সেখান থেকে নজর ঘুরিয়ে ফের নিজেদের চাপান-উতোরের দিকে নিয়ে আসতে চাইছে বলে সরব হল সিপিএম ও কংগ্রেস। তারা চাইছে, এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ থাকুক। আন্দোলনের মঞ্চও বড় হোক।
‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো’, এই আহ্বান সামনে রেখে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। সেখানে বামফ্রন্টের বাইরের দলগুলিকেও শামিল করার চেষ্টা হচ্ছে। আর জি করের ঘটনার তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে। সব দোষীর গ্রেফতার চেয়ে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দফতরে বিক্ষোভ সমাবেশের পরিকল্পনাও রয়েছে সিপিএমের। সেই কর্মসূচির জন্যও কংগ্রেস এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশিই, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বুধবার বলেছেন, ‘‘নবান্ন অভিযানে বিজেপি ‘বডি নিতে’ এসেছিল, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নন্দীগ্রাম এবং আরও অনেক জায়গায় তিনি ‘বডি’ তুলেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীরা তখন তাঁর সঙ্গী ছিলেন, এ সব তিনি ভালই জানেন। মুখোশের আড়ালে কেন বিজেপির আন্দোলন, এটা যেমন প্রশ্ন, তেমনই পুলিশের বিপুল আয়োজনও বিস্ময়কর! দু’পক্ষেরই লক্ষ্য, বিচারের দাবিটাকে ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া।’’
মহাজাতি সদনে এ দিন ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দিশা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ‘ছাত্র সমাজে’র নামে নবান্ন চলো, বন্ধ ডাকো, লাভ কার হল? মুখ্যমন্ত্রী এ বার বিজেপিকে দুষতে লাগলেন, সিবিআইয়ের কাছে বিচার চাইলেন। সেই একই ভাষ্য! বিজেপি আর তৃণমূল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিচার যারা চাইছে, তাদের কথাটা এ বার পিছনে, অন্য পথে ঠেলে দেওয়ার রাজীনিতি শুরু হয়ে গেল।’’ নিহত তরুণী চিকিৎসকের প্রতি সম্মান জানিয়ে এ দিন ছাত্র পরিষদের সভা-মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘তিলোত্তমা মঞ্চ’। ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী প্রিয়ঙ্কা চৌধুরীর বক্তব্য, আর জি কর-কাণ্ডে রাজ্য ও কেন্দ্রের তদন্তে শ্লথতার বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন চলবে।
আর জি করে যে ঘটনায় নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
এরই পাশাপাশি, আর জি করে প্রতিবাদের সময়ে মহিলা পুলিশ ছাড়াই তাঁকে ও তাঁর সঙ্গীদের নিগ্রহ করার অভিযোগ করেছেন সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলকে ই-মেলে অভিযোগ পাঠিয়ে এফআইআর দায়ের করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। গত ৯ অগস্ট আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে নিহত তরুণী চিকিৎসকের দেহ বার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাধা দিয়েছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী ও তাঁর সঙ্গীরা। মীনাক্ষীর অভিযোগ, সেই সময়ে অভিষেক গুপ্তের (ডিসি (উত্তর), কলকাতা পুলিশ) নেতৃত্বে পুরুষ পুলিশ-কর্মীরা শারীরিক ভাবে তাঁকে নিগ্রহ করেন।