দু’পক্ষের সংঘর্ষে দু’দলেরই বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। —নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল পূর্ব বর্ধমানের রায়না। দু’পক্ষের সংঘর্ষে দু’দলেরই বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। শুক্রবার রাতের এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রায়নার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজেপি-র বুথ কমিটির সভাপতি সুরজিৎ হাজরা চৌধুরীর অভিযোগ, খাঁপুকুরের পূর্বপাড়ায় কয়েক জন দলীয় কর্মীর উপর বিনা প্ররোচনায় হামলা করেছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁর কথায়, “আমরা কয়েক জন বসেছিলাম। হঠাৎই তৃণমূলের উপপ্রধান রিনু দে-র স্বামী দীপক দে-র নেতৃত্বে এক দল কর্মী-সমর্থক হামলা করে। আমাকে মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। হামলায় আমার মাথা ফেটে গিয়েছে। সে সময় কোনও রকমে ছুটে পালিয়ে গিয়ে পাড়ার একটি বাড়িতে সকলে আশ্রয় নিই।”
যদিও হামলার কথা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা অতর্কিতে তাদের আক্রমণ করে। রায়না ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রিনু দে বলেন, “বাড়ির মালিকের কাছে অনুমতি নিয়েই দেওয়াল লেখার কাজ করছি। কিন্তু শুক্রবার হঠাৎই কয়েক জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলের লেখা দেওয়াল মুছে বিজেপি লিখে দেন। বাধা দিতে গেলে তাঁরা হামলা করেন।” তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি উপপ্রধানের বাড়িতেও হামলা চলে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে চিটফান্ড-কাণ্ডে কি রাঘববোয়াল খুঁজছে সিবিআই
আরও পড়ুন: বিধানসভাই পাখির চোখ, ভোট পর্যন্ত মালদহে বিজেপি নেতা, কর্মীদের ছুটি বাতিল
বিজেপি-র দাবি, শুক্রবার থেকে তাদের সেবা সপ্তাহ শুরু হয়েছে। সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে রাতে সহনাগরিকদের মধ্যে কেক, বিস্কুট ও লজেন্স বিতরণ করা হচ্ছিল। অভিযোগ, সে সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে অতর্কিতে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণ করা হয়। ঘটনায় বুথ সভাপতি-সহ তিনজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্যামল রায়। তবে তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি দেওয়াল লিখন করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে সেই দেওয়াল মুঝে দিয়ে বিজেপি লিখে দেন বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে বহিরাগত দুষ্কৃতী নিয়ে এসে তৃণমূলকর্মীদের উপর চড়াও হয় বিজেপি। এমনকি, উপপ্রধানের বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। ঘটনায় বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন।’’
এই ঘটনার পর শনিবার রায়নায় যান বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক। তিনি বলেন, “উন্নয়নে দিশেহারা বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গোটা বাংলায় উন্নয়নের কাজ চলছে। তাই বিজেপি রাতের অন্ধকারে হামলা করেছে।”
গোটা ঘটনায় শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় নালিশ জানিয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।