পার্থর বিরুদ্ধে সরব এ বার তাঁর সহকর্মী অনন্তদেবও। ফাইল চিত্র
শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগের জন্য তাঁর কাছেও নামের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন, দাবি করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল নেতা অনন্তদেব এখন ময়নাগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান। তাঁর দাবি, পার্থ চেয়ে পাঠানোয় তিনি ২০১৬ সালে এসএসসি-র মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য নিজের বিধায়কের লেটার-হেডে পাঁচ জনের নাম দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, যাঁদের নাম পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের কেউই নিয়োগ হয়নি। এই দাবির পরেই অনন্তদেবের বিস্ফোরক মন্তব্য, “আমার ছেলেমেয়ে দু’জনেই স্নাতকোত্তর পাশ, টেট উত্তীর্ণ। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সুপারিশে ওদের নামও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দিয়েছিলাম। যোগ্যতা থাকলেও ওদের নিয়োগ হয়নি। এখন বোঝাই যাচ্ছে, তখন টাকা ছাড়া নিয়োগ হয়নি।” যদিও এ নিয়ে এখন বিতর্ক হোক, তা তিনি চাইছেন না। বলছেন, “এ সব নিয়ে এখন বিতর্ক করে কী লাভ!”
সূত্রের দাবি, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী গ্রেফতারের পরেই চাউর হয়ে যায়, তাঁর বাড়ি থেকে প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীর বিধায়কের ‘লেটার-হেড’ প্যাডে পাঁচ জনের নাম লেখা নিয়োগ সুপারিশ চিঠি ইডি উদ্ধার করেছে। সেই প্রসঙ্গে অনন্তদেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি মেনেও নেন। তিনি বলেন, “আমার সুপারিশ তো গ্রহণ করেনি, তাই হয়তো ওটা বাড়িতেই ছিল। আমরা, তৃণমূল বিধায়করা সেই সময়ে সবাই সুপারিশের চিঠি পাঠিয়েছিলাম।” অনম্তর দাবি, পার্থ নিজেই দলের বিধায়কদের কাছে নিয়োগের চিঠি চেয়েছিলেন। তবে অন্য বিধায়কদের সুপারিশে কারও চাকরি হয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা নেই বলে দাবি করেছেন অনন্ত।
দলের অন্দরে বরাবরই অনন্তদেব সোজাসাপ্টা কথা বলার জন্য পরিচিত। এক সময়ে আরএসপি করতেন। রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন। গত বিধানসভায় দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। সম্প্রতি পুরভোটে দল ফের তাঁকে প্রার্থী করে এবং পুরবোর্ডের চেয়ারম্যানও করা হয়। অনন্তদেবের মন্তব্যের দায় জেলা তৃণমূলের কেউ নিতে চাইছে না। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী অবশ্য বলেন, ‘‘এর থেকেই স্পষ্ট, তৃণমূল নেতারা নিজেদের প্যাডে চিঠি পাঠিয়েছেন এবং সঙ্গে টাকা। দুইয়ের মেলবন্ধনে রাজ্যে এত দিন চাকরি হয়েছে।’’ এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হবে সিবিআই, ইডি-কে, জানান তিনি।