—প্রতীকী চিত্র।
কয়েক দিন আগেই রাজ্যের তিন জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ওড়িশা থেকে আসা জ়িনত। তাকে ধরতে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল বনকর্মীদের। প্রায় ১০ দিনের চেষ্টা পর খাঁচাবন্দি করা সম্ভব হয়েছিল বাঘিনিকে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই ফের ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে বাঘের আতঙ্ক।
শনিবার বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেল বাঁশপাহাড়ির মানিয়াডির জঙ্গলে। গ্রামবাসীদের দাবি, জঙ্গলে লাল পিঁপড়ে সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁরা পাশ দিয়ে বাঘ চলে যেতে দেখেছেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বাঁশপাহাড়ি রেঞ্জের বন দফতরের কর্মীরা। ঘটনাচক্রে, যেখানে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে, সেই এলাকা ঘুরে গিয়েছিল জ়িনতও।
বন দফতরের প্রাথমিক অনুমান, বেলপাহাড়ির জঙ্গলে যে বাঘটি ঢুকে প়ড়েছে, তার গলায় রে়ডিয়ো কলার নেই। ফলে বাঘের গতিবিধি জানা যাচ্ছে না। বাঘটি কোথা থেকে এসেছে, তা-ও স্পষ্ট নয়।
সারাদিন বাঘের পায়ের ছাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডিএফও ওমর ইমাম বলেন , “পায়ের ছাপ দেখে মনে হচ্ছে এটি একটি পুরুষ বাঘ ঢুকে পড়েছে। বাঘটি কোথা থেকে এসেছে সেই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারব না। বাঘের গতিবিধির উপর সব সময় নজর রাখা হবে। রাস্তা পারাপারের সময় আমরা বিশেষ করে নজর রাখছি কারণ জ়িনতের মতোই এর গলায় রেডিও কলার নেই।” ডিএফও আরও বলেন,“জ়িনত থাকাকালীন যেভাবে প্রতিদিন সকালে গ্রামগুলিকে চিহ্নিত করে সতর্ক করা হতো সেই ভাবে সতর্ক করা হবে এবং প্রতিনিয়ত মাইকিংও করা হবে। গ্রামবাসীদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ জঙ্গলে কেউ যেন না যায়।”
এলাকার বাসিন্দা ধীরেন মুর্মু বলেন, “আমরা বেশ কয়েক জন জঙ্গলের মধ্যে কুরকুট সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। তখন দেখেছি জঙ্গলের মধ্যে একটি বড় জন্তু। আমার দেখে মনে হয়েছে বাঘ গায়ের রংটা হালকা লাল রয়েছে। দেখার পরে জঙ্গল থেকে আমরা ছুটে পালিয়ে যাই।” গ্রামবাসীরা যাতে কোন ভাবে আতঙ্ক না হয় তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বনদফতের কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশও রয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বেলপাহাড়ির এসডিপিও শ্রেয়া সরকার।
গত ডিসেম্বরে ওড়িশার সিমলিপাল থেকে বেরিয়ে ঝা়ড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়েছিল জ়িনত। সেখান থেকে পুরুলিয়া হয়ে বাঘিনি আস্তানা গেড়েছিল বাঁকুড়ার জঙ্গলে। সেখানে তাঁকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে খাঁচাবন্দি করে বন দফতর। পরে তাকে আবার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার পর ফের ঝাড়গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কিত ঝাড়গ্রামবাসী।