—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গের কমবেশি সব জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই বৃষ্টি শুরু হল কলকাতায়, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। শহরের আকাশও মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক ঘণ্টায় রাজ্যের পাঁচ জেলার কিছু অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি জেলা হল বাঁকুড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বৃষ্টির সঙ্গে ওই জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে হলুদ সতর্কতা জারি করে বজ্রবিদ্যুতের সময় মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৪৩.৮, ৪৪.৭, ৪৫.৩— ধারাবাহিক ভাবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তালিকায় শীর্ষে ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডা। তাপমাত্রা সেখানে বেড়েই চলেছিল। প্রতি দিনই তাপপ্রবাহের দাপটে হাঁসফাঁস পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। এমনকি, কলকাতাতেও তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে পরিস্থিতি বদলেছে ঝপ করে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের ঝড়বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র তাপমাত্রা কমে গিয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়েও নীচে চলে গিয়েছে পারদ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.৩ ডিগ্রি কম। মাত্র আট দিন আগে মরসুমের সবচেয়ে উষ্ণ দিনের সাক্ষী থেকেছে শহর। তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩ ডিগ্রিতে। তীব্র গরমের সেই হাহাকারে সোমবার স্বস্তি নিয়ে এসেছে বৃষ্টি।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সারা সপ্তাহ বৃষ্টি চলবে। আপাতত আগামী শনিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি বাড়তে পারে শুক্রবার। ওই দিন আবার কালবৈশাখীর পূর্বাভাস জানিয়েছে আলিপুর। কলকাতা-সহ দক্ষিণের সব জেলায় শুক্রবার বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টি (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) হতে পারে।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতির জন্য ঘূর্ণাবর্তকে দায়ী করেছেন আবহবিদেরা। বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় এই মুহূর্তে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ০.৯ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করছে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব রাজস্থান থেকে দক্ষিণ অসম পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত। যার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প প্রবেশ করছে গাঙ্গেয় বাংলায়। তাতেই ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি, জানিয়েছে হাওয়া অফিস।