Dilip Ghosh

তৃণমূলে যাঁরা কর্মচারী, বিজেপিতে এসে তাঁরা কার্যকর্তা: দিলীপ ঘোষ

ভোটের টেবিলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই মুকুলের হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৫:৫১
Share:

বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।

‘‘তৃণমূলে যাঁরা কর্মচারী, বিজেপিতে এসে তাঁরা কার্যকর্তা হন’’— বুধবার এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপি সূত্রের খবর, সোমবার দিল্লিতে ভোট প্রস্তুতির বৈঠকে সাংসদ অর্জুন সিংহ দলে সসম্মানে কাজের স্বাধীনতার অভাব নিয়ে তোপ দাগেন। দিলীপবাবু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠরা অর্জুনের নিশানায় ছিলেন বলে দলীয় সূত্রের দাবি। অর্জুন এবং দিলীপবাবু অবশ্য এমন কোনও দ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু এ দিন অর্জুনের অভিযোগ নিয়ে ফের প্রশ্ন করা হলে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কে বলছেন, সম্মান পাচ্ছেন না? যদি কেউ এ কথা বলে থাকেন, তা হলে বলতে হবে, তৃণমূলে কর্মচারী ছিলেন। বিজেপিতে এসেই সম্মান পেয়ে কার্যকর্তা হয়েছেন। ভবিষ্যতে যাঁরা আসবেন, তাঁরাও সম্মান পাবেন। অর্জুন সিংহকে রাজ্য়ের সহ সভাপতি এবং উত্তর কলকাতার পর্যবেক্ষক করা হয়েছে।’’

Advertisement

বিজেপি-র একটি সূত্রের দাবি, দলের অনেকের মধ্যে যে ক্ষোভ বহু দিন ধরে জমে রয়েছে, সোমবার দিল্লির বৈঠকে সেটাই প্রকাশ করেছেন অর্জুন, মুকুল রায়ের হাত ধরে যাঁর তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে প্রবেশ। সে দিক থেকে, এই দ্বন্দ্বে মুকুলের প্রচ্ছন্ন ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে এ দিন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বাড়িতে মধ্য়াহ্নভোজ রাজনৈতিক শিবিরের চর্চায় উঠে এসেছে। ভোটের টেবিলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই মুকুলের হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছেন। সাংসদও হয়েছেন। যেমন— সৌমিত্র খান, নিশীথ প্রামাণিক এবং অর্জুন। ছিলেন স্বপন দাশগুপ্ত যিনি ইদানীং বাবুলের সঙ্গেই মুকুলের পক্ষ নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করছেন বলে খবর। উল্লেখযোগ্য ভাবে সাবেক বিজেপির মুখ হিসাবে একমাত্র উপস্থিতি ছিল সাংসদ জগন্নাথ সরকারের। ভোজের টেবিলে কী নিয়ে কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে অবশ্য কেউই মুখ খুলতে চাননি। তবে দিলীপবাবু বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের না থাকা পর্যবেক্ষকদের মতে তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখ্য় দিলীপবাবু মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় ফিরে এসেছেন।

এ দিকে, দিল্লি থেকে আচমকা কলকাতায় ফিরেই রবিবার মুকুল যে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন এবং বিজেপির প্রতি তাঁর পূর্ণ আস্থার কথা জানিয়েছেন, তার পিছনেও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ‘সক্রিয়’ ভূমিকা ছিল বলে ওই সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। দিল্লির বিজেপি শিবিরের খবর, মুকুল যাতে কলকাতায় গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বিজেপি-তে থাকার কথাই জোর দিয়ে বলেন, সেই ‘নির্দেশ’ তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছিল। এমনকি, ওই সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিয়োও সরাসরি দিল্লিতে পৌঁছে যায়। তাঁর দৈনন্দিন গতিবিধিও ‘নজরে’ রাখা হচ্ছে বলে ওই সূত্রের দাবি। কারণ মুকুল প্রতিপক্ষ শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ লোকজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে দিল্লির সন্দেহ।

Advertisement

মুকুল অবশ্য এই ধরনের সমস্ত অভিযোগ ও জল্পনা দৃঢ় ভাবে খারিজ করেছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমি কারও নির্দেশে সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। কোনও ভিডিয়ো ক্লিপও কোথাও পাঠানো হয়নি। আর তৃণমূলের কারও সঙ্গেও আমার কথা হয়নি। আবার বলছি, সবটাই বানানো গল্প এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement