ঢোলাহাট থেকে দীনেশকে আক্রমণ অভিষেকের। —ফাইল চিত্র।
আগাম আভাস না দিয়ে রাজ্যসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে শুক্রবার দল ছাড়ার কথা বলেন দীনেশ ত্রিবেদী। ‘তৃণমূলে দমবন্ধ হয়ে আসছে’ বলে অভিযোগ করেছেন। যে ভাবে দীনেশ দল ছাড়েন, তাতে গোটা দেশের নজরে চলে আসে বিষয়টি। শনিবার নাম না করে এ বার তাঁকে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনেকে এখন বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন। বলছেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই বোধহয় বিজেপি-র আইসিইউ-তে ভর্তি হচ্ছেন। দম তো আগামী দিনে মানুষ বন্ধ করবেন। বাংলার মানুষের আবেগ এবং ভালবাসা নিয়ে যাঁরা খেলছেন, মানুষের ভালবাসা যাঁরা দিল্লির কাছে বিক্রি করছেন, মানুষ তাঁদের যোগ্য জবাব দেবেন।’’
শুক্রবারই নাটকীয় ভাবে তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে যান দীনেশ ত্রিবেদী। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, ‘‘আমার রাজ্যে সর্বত্র হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছি না। আমি রবীন্দ্রনাথ, নেতাজির ভূমি থেকে আসা মানুষ। এ সব আর দেখতে পারছি না। দলে আছি বলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হচ্ছে। কিন্তু আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে। এর চেয়ে ইস্তফা দিয়ে বাংলায় গিয়ে কাজ করা ভাল।’’
তৃণমূল ছেড়ে দীনেশের বিজেপি-তে যাওয়া একরকমের পাকা বলেই সূত্রের খবর। যদিও কোনও তরফেও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে তা ঘোষণা হয়নি। তবে দীনেশকে নিজেদের দলে আসার জন্য আহ্বান জানিয়ে রেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব। যার প্রেক্ষিতে শনিবার দীনেশ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘বিজেপি-র যে সব নেতা আমাকে তাঁদের দলে স্বাগত জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এটা সত্যিই দারুণ একটা প্রাপ্তি। তবে আগে আমি একটু সামলে নিই।’’ এর পর তাঁর সংযোজন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি মাথা উঁচু রেখে চলেন। কিন্তু, তাঁর জানা উচিৎ, সকলেই মাথা উঁচু করেই বাঁচতে চান। যদি আতঙ্ক ও ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে মাথা উঁচু করে বাঁচা সম্ভব নয়।’’ এর পরই শনিবার দীনেশকে কটাক্ষ করতে দেখা যায় অভিষেককে।
অভিষেকের ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন তৃণমূল ত্যাগী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ, যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, এগুলো যার যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আজ যাঁরা দলটায় রয়েছেন, তাঁরা কি কখনও দল বদল করেননি? আমাদের নেত্রী কি দলবদল করেননি? তিনি কি কখনও ইউপিএ এবং বিজেপি-র সঙ্গে ছিলেন না। গণতন্ত্রে যে কেউ, যে কোনও রাজনৈতিক দলে থাকতে পারেন। এতে কারও আপত্তি থাকতে পারে না।’’