গঙ্গাসাগরে পূণ্যার্থীর ঢল।—ছবি এএফপি।
বিশ্বাসীরা যে-তীর্থ এক বার না-করলেই নয় বলে মনে করেন, সেই গঙ্গাসাগরে কেউ কেউ হারিয়ে যান। অনেকে আবার বৃদ্ধ বাবা-মা-ঠাকুরমাকে ফেলে যান সাগরসঙ্গমে। সেই প্রবীণদের ঠাঁই হয় সরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার শিবিরে।
তবে এ বার মেলা শেষে এমন এক জনও নেই বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের দাবি। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘মেলায় হারিয়ে যাওয়া বৃদ্ধবৃদ্ধা বা শিশুদের সকলকেই বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেপাল, ভুটানের কিছু পুণ্যার্থীও হারিয়ে গিয়েছিলেন। ফেরত পাঠানো গিয়েছে তাঁদেরও।’’
অন্যান্য বছর মেলা শেষে ৫০-১০০ জন নিখোঁজ মানুষের দায়িত্ব সামলাতে হত প্রশাসনকে। তার মধ্যে কিছু মানুষ আজও এ রাজ্যের বিভিন্ন আশ্রয়ে রয়েছেন বলে জানান মেলার নিখোঁজদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ভাস্কর পাল। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, এ বার মেলার নিখোঁজদের খুঁজে বার করে পরিবারে ফিরিয়ে দিতে সহায়ক হয়েছে বিশেষ প্রযুক্তি। ১০ দিনে মেলায় হাজার তিনেক বৃদ্ধবৃদ্ধা ও শিশু হারিয়ে গিয়েছিলেন। পায়ের হাড় ভাঙা এবং অচৈতন্য অবস্থায় সাগরতট থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের রামরানি দেবীকে। খুব দ্রুত তাঁর পরিজনদের খুঁজে বার করে দুই ছেলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ওই মহিলাকে।
অনেক শিশু-বৃদ্ধ নাম-ঠিকানা ঠিকঠাক বলতে না-পারায় সমস্যা হয়। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ বছর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও জেটিঘাটে শিশু ও বৃদ্ধদের পরিচয়, ঠিকানা ও পরিজনের মোবাইল নম্বর লিখে নেওয়া হয়েছিল। তা ‘পরিচয়’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সার্ভারে তুলে রাখার পাশাপাশি নীল রঙের ‘কিউআর কোড-সহ রিবন’ বেঁধে দেওয়া হয় বৃদ্ধ ও শিশুদের হাতে। বৃদ্ধবৃদ্ধা ও শিশুকে উদ্ধারের পরে প্রথমে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় অস্থায়ী হাসপাতালে। পরে তাঁদের হাতে বাঁধা রিবনের ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করে তথ্য জেনে ফেরানোর ব্যবস্থা হয়েছে। সাহায্য নেওয়া হয়েছে বজরং দল ও হ্যাম রেডিয়ো-সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। হ্যাম রেডিয়োর সদস্য অম্বরীষ নাগবিশ্বাস বলেন, ‘‘মেলার কয়েক দিন আমাদের সদস্যদের সক্রিয় রেখেছিলাম।’’