উপায়: নতুন রকমের মাস্ক পরে পুনম ও সুনীত। নিজস্ব চিত্র
ঠোঁট নাড়ানো দেখেই মানুষের কথা বোঝেন তাঁরা। আর সেই ঠোঁটই এখন ঢাকা পড়ে গিয়েছে মাস্কে। করোনা প্রতিরোধ করতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সভ্য জীবনের অঙ্গ হবে এই মাস্ক।
সেটাই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূক ও বধির মানুষগুলোর যোগাযোগ স্থাপনে।
সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছেন উলুবেড়িয়ার বাণীতলা গ্রামের মূক ও বধির দম্পতি সুনীত ও পুনম চক্রবর্তী। ঠোঁটের ওঠা-নামা আর হাতের ইশারায় ভাষার আদানপ্রদানেই অভ্যস্ত তাঁরা। মাস্কের ব্যবহারে সমস্যায় পড়েছিলেন বছর পঁচিশের এই দম্পতি। শেষে উপায় বাতলে তাঁরা মাস্কের মাঝখানে ঠোঁটের অংশে স্বচ্ছ প্লাস্টিক লাগিয়ে নিয়েছেন। ফলে ঠোঁটের ইঙ্গিত এখন স্পষ্ট। সুনীত আর পুনম বোঝেন, ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা লিখে বলেন, ‘‘ঠোঁট বন্ধ থাকলে আমাদের কথাও কাউকে বোঝাতে পারছিলাম না। তাই ইন্টারনেট দেখে এই ব্যবস্থা করেছি।’’
সুনীতের বাবা সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছেলে ও বৌমা মূক-বধির। ওদের ভাষা আমরা বুঝি মুখের ভঙ্গি, ঠোঁট নাড়া ও হাতের ইশারায়। মাঝের কটা দিন তো খুব সমস্যায় পড়েছিলাম ওদের কথা বুঝতে। ওরা লিখে বোঝাচ্ছিল। আর এখন ওই প্লাস্টিকের অংশের জন্য সব সমস্যাই মিটে গিয়েছে।’’
তবে অন্যের কথা বুঝতে এখনও সমস্যা হচ্ছে এই দম্পতির মতো অনেকেরই। কলকাতা মূক বধির বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মন্দিরা বন্দোপাধ্যায় বলেন, "এমন মানুষদের ভাষা বোঝাপড়ার জন্য মুখ ও ঠোঁটের একটা বড় ভূমিকা আছে। মাস্ক পরে থাকলে সেটা সম্ভব হবে না। কিন্তু ঠোঁটের অংশটা যদি কোন স্বচ্ছ কিছু দেওয়া হয় তাহলে ঠোঁটের ওঠানামা সহজেই বোঝা যাবে। যে দম্পতি নিজেরা এই মাস্ক তৈরি করে ভাষা বিনিময় করছে তাদের ধন্যবাদ। এমন মাস্ক বাজারে এলে অনেক সব মূক বধির মানুষই উপকৃত হবেন।’’