মোদী কেয়ার-এ এখনই প্রশাসনিক ভাবে না বলার সময় আসেনি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডাকা দু’দিনের কর্মশালা থেকে ফিরে এমনই মত স্বাস্থ্যকর্তাদের। মোদী কেয়ার-এ যোগ দিলে রাজ্যের লাভ-ক্ষতির অঙ্ক জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবন নোট দেবে নবান্নে। এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ‘রাজনৈতিক’ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান স্বাস্থ্য কর্তারা।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিল্লিতে ন্যাশনাল হেলথ প্রোটেকশন স্কিম(এনএইচপিএস) কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সবকটি রাজ্যকে নিয়ে কর্মশালা ডেকেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পটির বিরোধিতা করলেও স্বাস্থ্য সচিব অনিল বর্মাকে কর্মশালায় যোগ দিতে নিষেধ করেননি। আরেক স্বাস্থ্য কর্তা বিনোদ কুমারও দিল্লির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। এতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা বেশ খুশিই হয়েছেন। মন দিয়ে রাজ্যের প্রস্তাবগুলিও শুনেছেন। যদিও প্রকল্প নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা।
মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে মোদী কেয়ার নিয়ে তাদের ভাবনার কথা জানিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সোশিও-ইকনমিক কাস্ট সেনসাস(এসইসিসি) অর্থাৎ আর্থসামাজিক অবস্থান বিচার করে যে জনগণনা ইতিমধ্যেই হয়েছে, সেখান থেকেই ১০ কোটি পরিবার বেছে নেওয়া হবে। তার মধ্যে ২ কোটি শহর এবং ৮ কোটি গ্রামীণ মানুষ এই সুবিধা পাবেন। প্রাথমিক বাছাই পর্বের পর রাজ্যভিত্তিক উপভোক্তা পরিবারের সংখ্যা জানাবে কেন্দ্র। তা ঠিক করতে আরও মাসখানেক লাগতে পারে বলে দিল্লি জানিয়েছে। রাজ্য নিজেরা ট্রাস্ট তৈরি করে বা দরপত্র চেয়ে বিমা কোম্পানি নির্বাচন করে এই প্রকল্প চালাতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিমার টাকার ৬০% দেবে কেন্দ্র। বাকি ৪০% দিতে হবে রাজ্যকে। কেন্দ্র নীতিগত কিছু বিষয় ঠিক করে দিলেও রাজ্যের হাতেই প্রকল্পটি চালানোর স্বাধীনতা থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তারা।
স্বাস্থ্য ভবন মনে করছে, এ রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী ও খাদ্যসাথী প্রকল্পের অধিকাংশ উপভোক্তাকেই মোদী কেয়ার-এও অন্তর্ভূক্ত করে নেওয়া যাবে। পাশাপাশি বিমার প্রিমিয়ামের টাকাও অনেকটা কেন্দ্রের থেকে আদায় করে নেওয়া সম্ভব হবে। জনপ্রতি বিমার অঙ্কও বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করার সুযোগ থাকছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
এখন রাজ্যে ৫৫ লাখ পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পায়। এর মধ্যে ৩৫ লক্ষ স্বনির্ভর দলের সদস্য-সদস্যাদের পরিবার। এ ছাড়া তিরিশ হাজারি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় উপভোক্তার সংখ্যা রাজ্যে ১.১০ কোটি পরিবার। স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, খাদ্যসাথী প্রকল্পে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের মধ্যে রয়েছে দেড় কোটি পরিবার। যাদের বাছা হয়েছে আর্থসামাজিক স্তর নির্ণায়ক সমীক্ষা থেকে। সে ভাবেই বাছা হবে মোদী কেয়ার-এর উপভোক্তাদের। তা হলে এ রাজ্যের উপভোক্তা বাছাইয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।