Variable Energy Cyclotron Centre

গোমুখ থেকে সাগর, গঙ্গাপার সাফাইয়ে নেমেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা

কেন্দ্রের ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের আদলে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভিইসিসি। এই প্রকল্পে তিন বছর ধরে গোমুখ থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত গঙ্গার পার সাফাই করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:১৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শুধুই শহরের গঙ্গাপার নয়, গঙ্গার উৎসস্থল গোমুখও আবর্জনায় দিন দিন দূষিত হয়ে যাচ্ছে। সেখানে জমছে প্লাস্টিক-সহ বিভিন্ন বর্জ্য। গোমুখ থেকে নেমে গঙ্গা যে পথে দেশের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সেই সব জায়গার পরিস্থিতি আরও করুণ। এই তথ্য জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় পরমাণু শক্তি দফতরের অধীনস্থ পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ‘ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার’ (ভিইসিসি)।

Advertisement

কেন্দ্রের ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের আদলে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভিইসিসি। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে তাদের দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে তারা জানায়, এই প্রকল্পে তিন বছর ধরে গোমুখ থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত গঙ্গার পার সাফাই করা হবে এবং এই সংক্রান্ত সচেতনতার প্রচার চালানো হবে। তারই প্রথম পর্যায়ে গোমুখ থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে সাফাই অভিযান চালানো হয়েছে। ৩১০ কিলোমিটার রাস্তা থেকে ২২০ কিলোগ্রাম প্লাস্টিক-সহ বিভিন্ন ধরনের অপচনশীল আবর্জনা সংগ্রহ করে স্থানীয় পুর সংস্থাগুলিকে জমা দেওয়া হয়েছে।

ভিইসিসি জানাচ্ছে, ভ্রমণ, তীর্থযাত্রা, পর্বতারোহণ-সহ বিভিন্ন কারণে গঙ্গার পার প্লাস্টিক এবং অপচনশীল বস্তুতে ছেয়ে গিয়েছে। সংস্থার অধিকর্তা সুমিত সোম জানান, তাঁরা ওই সাফাই অভিযান চালানোর সময়ে বিভিন্ন পুরসভা এবং গঙ্গাকে ঘিরে থাকা তীর্থস্থানগুলির মন্দির কমিটি, সাধুসন্ত ও তীর্থযাত্রীদের মধ্যে প্রচার করেছেন, যাতে কোনও ভাবেই পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক বস্তু গঙ্গায় ফেলা না হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, মানুষ ওই অভিযানে সাড়া দিয়েছেন। ছয় সদস্যের দল গিয়েছিল সাফাই অভিযানে। তাঁদের দেখে স্থানীয় ভাবে প্রায় ৬০০ মানুষ সেই অভিযানে যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। আমরা তাঁদের বুঝিয়েছি, যে কোনও উপায়ে গঙ্গায় এই ধরনের জিনিস ফেলা ঠেকাতে হবে।’’

Advertisement

ছয় সদস্যের এই দলের প্রধান তথা স্বচ্ছতা কমিটির যুগ্ম সচিব সুমন গুহ জানালেন, স্থানীয় ভাবে তাঁরা শুনেছেন যে, গোমুখে হিমবাহ বেশ খানিকটা পিছিয়ে গিয়েছে। তাঁরা খবর পেয়েছেন, পর্বতারোহণে যাঁরা যান, তাঁরা নিজেদের উষ্ণ রাখতে ডিজ়েল, পেট্রল দিয়ে আগুন জ্বালেন। তার পরে সেই সমস্ত সরঞ্জাম উপরেই ফেলে আসেন। আবার ধর্মীয় আচার পালন করতে গিয়ে গঙ্গায় এমন সব জিনিস ফেলা হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে খাদ্য-শৃঙ্খলে চলে আসছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দশ দিনের কর্মসূচিতে স্থানীয় পুর সংস্থার সাফাইকর্মী, বিভিন্ন ঘাটের সাফাইকর্মী, এমনকি পর্যটকদেরও যুক্ত করেছিলাম। এমনও দেখেছি, আমাদের সঙ্গে কাজ করার পরে পর্যটকেরা গোমুখের পথে পাহাড় থেকে প্রচুর প্লাস্টিক কুড়িয়ে এনে জমা দিচ্ছেন। কিন্তু এই উদ্যোগযাতে নিরন্তর চলে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’’

ভিইসিসি জানাচ্ছে, তাদের এই অভিযানের রিপোর্ট তারা কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠাবে। তারা জানাচ্ছে, পরমাণু শক্তি নিয়ে কাজ করলেও পরিবেশ সংক্রান্ত কাজও এখন তারা শুরু করেছে। তাদের দাবি, প্রকৃতিতে পড়ে থাকা প্লাস্টিক এক হাজার বছরেও ধ্বংস হয় না। কিন্তু পরমাণু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেই প্লাস্টিক ধ্বংস করা যায়। যে কারণে তাদের এই উদ্যোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement