আশীর্বাদ: আমডাঙার স্কুলে পড়ুয়াদের জন্মদিনে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা ভোট— রাজনৈতিক সংঘর্ষে বারবার শিরোনামে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা। সেই আমডাঙার স্কুলেই দেখা গেল অন্য ছবি। গাঁটের কড়ি খরচ করে পড়ুয়াদের জন্মদিন পালন করলেন শিক্ষকেরা। এই ছবি মরিচা জুনিয়র হাইস্কুলের।
বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শঙ্খ-উলুধ্বনির সঙ্গে ছেলে বা মেয়ের মাথায় দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন অনেকেই। সঙ্গে কপালে দইয়ের তিলক। সামনে থাকে পায়েসের বাটি। সেই চিত্রের অন্যথা হয়নি ওই স্কুলেও। সেখানে পড়ুয়াদের আশীর্বাদ করেন অভিভাবক, শিক্ষকেরা। সঙ্গে পাত পেড়ে ভোজেরও ব্যবস্থা করেছিলেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। ভোজের মেনুতে ছিল ফ্রায়েড রাইস, আলুর দম, চাটনি, পাপড়, মিষ্টি। পড়ুয়াদের জন্মদিন উপলক্ষে রংবেরঙের বেলুনে সাজানো হয় স্কুলের একটি ঘর। যাদের জন্মদিন, তাদের মাথায় দেখা গেল টুপিও। এ-সবের মধ্যেই কেক কেটে জন্মদিনের উৎসবে মেতেছিল খুদেরা।
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির স্কুলে মার্চ, এপ্রিল ও মে-তে ১০ পড়ুয়ার জন্মদিন ছিল। শনিবার তাদের জন্মদিন উদ্যাপন করেন শিক্ষকেরা। তালিকায় থাকা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া মৌসম মণ্ডল বলল, ‘‘ভাবিনি, এ ভাবে যে স্কুলে কখনও জন্মদিন পালন হবে।’’ মৌসমের সহপাঠী মহম্মদ কালাম বলছে, ‘‘স্কুলই আমাদের কাছে ঘরবাড়ি। এখানে তো বাড়ির মতো করেই জন্মদিন পালন হবে!’’ ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া সোনিয়া খাতুন ভোজ নিয়ে আপ্লুত। অন্য খুদে পড়ুয়া প্রসেনজিৎ রায়, বাবাই মণ্ডলেরাও মেনু নিয়ে উচ্ছ্বসিত। জন্মদিন যাদের, তারাই শুধু নয়, পাত পেড়ে ভোজ খেয়েছে স্কুলের সব পড়ুয়াই।
বছরখানেক আগে স্কুলের বোর্ডে লিখে, একটি চকলেট বা পেন উপহার দিয়ে পড়ুয়াদের জন্মদিন পালন শুরু করেন শিক্ষকেরা। এখন জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানটির কলেবর বৃদ্ধি করেছেন তাঁরা। যাঁর মস্তিকপ্রসূত উদ্যোগ, সেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমিত ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘পড়ুয়ারা খুশি থাকলে স্কুলে প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায়।’’ এ-সবের জন্য তো অনেক খরচ হয়! টাকা আসছে কোথা থেকে? সুমিতবাবু জানান, শিক্ষকেরা মিলেই এই অর্থের ব্যবস্থা করেন। স্কুলে রয়েছেন তিন জন শিক্ষক।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।