সাগর দত্ত মেডিক্যালে বিক্ষোভ রোগীর আত্মীয়দের। ছবি: সারমিন বেগম।
কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের না ছাড়লে মৃতার দেহ তারা নেবে না, দাবি পরিবারের। রাস্তায় শুয়ে কান্নাকাটি করতেও দেখা যায় মৃতার পরিবারের সদস্যদের। সঙ্গে রয়েছেন প্রতিবেশীরাও। তাঁদের বিক্ষোভে উত্তাল হাসপাতাল চত্বর। অন্য দিকে, নিরাপত্তা-সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাত থেকেই হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।
শুক্রবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। রঞ্জনা সাউ নামে এক মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অভিযোগ, হাসপাতালে আনার পরেও রোগীর কোনও রকম চিকিৎসা হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। শেষে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় রঞ্জনার। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চারতলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডে। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের বেগ পেতে হয়। এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তার, নার্স-সহ সাত জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুলিশকর্মীও রয়েছেন। এই হামলার ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে। এই গ্রেফতারির বিরোধিতায় শনিবার সকাল থেকে হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হন মৃতার পরিবারের সদস্যেরা। দাবি, যত ক্ষণ পর্যন্ত না ধৃতদের পুলিশ ছাড়ছে, তত ক্ষণ দেহ নেবেন না তাঁরা।
অন্য দিকে, শুক্রবার রাত থেকেই হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতাল চত্বরে চলছে ধর্নাও। বহির্বিভাগ বা জরুরি বিভাগে আপাতত পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। সকালে তাঁদের আন্দোলনে যোগ দেন হাসপাতালের নার্স এবং মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের দাবি, যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক থাকলে রোগীর এত পরিজন একসঙ্গে কী ভাবে হাসপাতালের উপরের তলায় উঠলেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিক্ষোভরত নার্সেরা।