CYclone Amphan

ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরাতেই স্পষ্ট হল দুর্নীতি, দাবি বামেদের

শনিবার জলঙ্গির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর এক নিকট আত্মীয় এবং আত্মীয়সম এক পড়শি আমপানের ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে নিজেদের ‘ভুল’ স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

জলঙ্গি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৫:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার বিরোধীদের তোলা সেই অভিযোগে সিলমোহর পড়ল।

Advertisement

শনিবার, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির পঞ্চায়েত প্রধানের দুই আত্মীয় আমপানে বিধ্বস্ত বাড়ি তৈরির ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ায় তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে যে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল, তা স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। অভিযোগ উঠতেই নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি প্রমাণ করতে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধান মমতা হালদার ঘোষণা করেছিলেন, ‘স্বজনপোষণে’র প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগ করবেন তিনি। বিরোধীদের প্রশ্ন, এ বার কী করবেন মমতাদেবী?

শনিবার জলঙ্গির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর এক নিকট আত্মীয় এবং আত্মীয়সম এক পড়শি আমপানের ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে নিজেদের ‘ভুল’ স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এখনও তাঁদের ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ বলেই দাবি করছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, স্বজনপোষণ নয়, ভুল করে ওই দু’জনের কাছে টাকা গিয়েছিল বলেই তাঁরা টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে ‘অন্যায়’ কিছু দেখছেন না তাঁরা। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বরের দাবি, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে ভুল হয়েছিল। যে ভাবেই ভুল হোক না কেন, ওই ঘটনার ফলে কিছু অযোগ্য ব্যক্তির হাতে টাকা গিয়েছিল। আমরা খুশি সরকারি টাকা ফেরত এসেছে।’’ জলঙ্গির প্রধান মমতা প্রায় একই সুরে বলেন, ‘‘প্রশাসনের ভুলের জন্যই এমনটা ঘটেছে। আমার কোনও আত্মীয়ের নাম আমি তালিকায় রাখিনি। প্রশাসন তদন্ত করলেই তা বুঝতে পারবে।’’ তাঁর ভাসুর ননীগোপাল হালদারের দাবি, ‘‘কেন এমন হয়েছে বলতে পারব না। আমি কোথাও ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদনও করিনি। আমার ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি, তাই সরকারি টাকা ফেরত দিয়েছি।’’

প্রতিবেশী বাপি হালদার ও মনোজ হালদারের দাবি, তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। টাকা ফেরত দেওয়ার পর থেকেই সুর চড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে গোপন আঁতাঁতেই এমনটা হয়েছে। জলঙ্গির প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের ইউনুস সরকার বলেন, ‘‘এত দিন যে দাবি করে আসছিলাম তা জলের মতো স্বচ্ছ হয়ে গেল। এ বার প্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে।’’ জলঙ্গির ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে ৬৮ জন ২০ হাজার করে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের পাকা বাড়ি আছে। আমরা সেই তালিকা প্রশাসনকে দিয়েছি। লজ্জা থাকলে ওই প্রধান পদত্যাগ করবেন।’’

কেবল জলঙ্গি নয়, রানিনগরের মালিবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান-সহ একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধেও আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা বিলি নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে প্রশাসনের কাছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাঁদের ভূমিকা নিয়েও। রানিনগর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শাহ আলম সরকার অবশ্য আশ্বস্ত করছেন, ‘‘তদন্ত চলছে, যদি স্বজনপোষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তা হলে প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় ভাবেও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement