২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলের নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।
একুশের মঞ্চে পাহাড় কোথায়?
রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কোচবিহার থেকে জঙ্গলমহল, মতুয়া থেকে মুর্শিদাবাদ, রাজ্যের প্রায় সব এলাকার নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু পাহাড়ের কাউকে দেখা যায়নি এই সমাবেশে। অথচ গত বেশ কয়েক বছর পাহাড়ের ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষনেতারা কেউ না কেউ হাজির থাকতেন এই অনুষ্ঠানে। এ বারে তা হলে কি লোকসভা ভোটে হারের পরে দূরত্ব তৈরি হল পাহাড়ে ক্ষমতায় থাকা অনীত থাপা এবং তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে? নাকি এই ‘দূরত্ব’ আসলে রাজনৈতিক কৌশল?
পাহাড় প্রসঙ্গে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোনও নেতাও কিছু বলতে চাননি। এমনকি, কিছু বলতে চাননি পাহাড়ের ক্ষমতাসীন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) প্রধান অনীত থাপাও। অনীতের দলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারের পাশেই আছি। পাশেই থাকব। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের জন্যও প্রস্তুতি নেব। কিন্তু রাজ্যের শাসকদলের থেকে একটু দূরত্ব রাখা হচ্ছে। না হলে পাহাড়ে দলের ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব পড়ছে।’’ তবে সরকারি ভাবে জিটিএ-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এসপি শর্মা বলেছেন, ‘‘জিটিএ-প্রধান তথা দলের সভাপতির কিছু প্রশাসনিক এবং ব্যক্তিগত কাজ থাকায় তিনি সমাবেশে থাকতে পারেননি।’’
দলীয় সূত্রের খবর, সভার কয়েক দিন আগেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নেতৃত্বের। অনীত থাপা নিজে দু’দিনের জন্য রাজ্যের বাইরে গেলেও রবিবার কলকাতা হয়ে ফিরেছেন। দলের নেতারা ভোটের পরে পর্যালোচনা করে দেখেছেন, বিজেপির গত বারের লোকসভার ‘লিড’ পাহাড়ে আড়াই লক্ষ থেকে কমিয়ে ৯৩ হাজার করা গেলেও তৃণমূলের প্রতীক বা দলের সঙ্গে তৃণমূলের ওঠাবসা পাহাড়বাসী পছন্দ করছেন না। তৃণমূলকে সঙ্গে না নিয়ে অনীতের দল জিটিএ ভোট, পুরভোট এবং পঞ্চায়েত ভোটে দল বিপুল ভাবে পাহাড়ে জিতছে। কিন্তু উল্টোটা হলেই হার। যেমন হয়েছে লোকসভা ভোটে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সূত্রে বক্তব্য, ২০২৬ সালে বিধানসভার আগে কালিম্পং, মিরিক এবং কার্শিয়াং পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। সে কথা মাথায় রেখেই সরকারেরসঙ্গে প্রশাসনিক ভাবে সমন্বয় রাখলেও দলগত ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষপাতী অনীতরা। সে বার্তা দু’দিন আগে তৃণমূল শিবিরের শীর্ষস্তরেও জানানো হয়েছিল বলে খবর। এর পরে আর রাজ্যের শাসক দলের তরফে গোর্খা প্রতিনিধিদের একুশের সভায় নতুন করে ডাকা হয়নি।