Tourist

Tourists: সতর্কতা শিকেয়, বিপর্যয়েও ভিড় বাড়ছে পাহাড়ে

শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিমগামী গাড়ির স্রোত লেগেই আছে। পুরোপুরি দুর্যোগমুক্তির আগেই ঝুঁকি নিয়ে পর্যটনের প্রয়োজন কী, উঠছে প্রশ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৬:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

অতিমারির প্রকোপ তো আছেই। তার উপরে অবিশ্রান্ত প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। আটকে পড়া পর্যটকেরা কোনও ভাবে সমতলে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তার মধ্যেও ভাটার লক্ষণ নেই পাহাড়ভ্রমণে!

Advertisement

ধসে বিপর্যস্ত পথঘাট পেরিয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং শহরে তো বটেই, ওই দুই জেলার বিভিন্ন গ্রামে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। এমনিতে তিন-চার ঘণ্টায় যেখানে যাওয়া যায়, ঘুরপথে সেখানে পৌঁছতে আট ঘণ্টাও লেগে যাচ্ছে। তবু শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিমগামী গাড়ির স্রোত লেগেই আছে। পুরোপুরি দুর্যোগমুক্তির আগেই ঝুঁকি নিয়ে পর্যটনের প্রয়োজন কী, উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে পর্যটকদের সচেতনতা নিয়েও। অনেকেই বলছেন, বর্ষা কাটতে না-কাটতেই উত্তরাখণ্ড বা উত্তরবঙ্গের দুর্গম এলাকায় যাওয়ার আগে যথেষ্ট সচেতনতা জরুরি।

সম্প্রতি কালিম্পঙের কোলাখামে বেড়াতে গিয়ে দুর্যোগে আটকে পড়েছিলেন স্মরজিৎ রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। অনেক কষ্টে সমতলে ফিরেছেন। শিলিগুড়িতে পৌঁছে তিনি জানান, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পাহাড় অভিমুখে পর্যটকের ঢল নেমেছে। অনেক জায়গায় রাস্তা বেহাল, পরিকাঠামো ভাঙা। এর মধ্যে পর্যটকেরা হাজির হলে তাঁরা তো বিপদে পড়বেনই, স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরেও চাপ বাড়বে। কারণ, অনেক জায়গায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছতেই পারছে না। স্থানীয় বাজারে মজুত সামগ্রীর দাম বাড়ছে হুহু করে।

Advertisement

প্রশাসন জানাচ্ছে, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধস পুরোপুরি সরানো যায়নি। বিরিকধারায় ধস নেমে প্রায় ২০ মিটার রাস্তা বন্ধ। সারাতে আরও অন্তত পাঁচ দিন লাগবে। দার্জিলিং যাওয়ার ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কও বন্ধ। রোহিণী রোড দিয়ে কোনও মতে যোগাযোগ চলছে। সুখিয়াপোখরি, মানেভঞ্জন, পোখরিবঙের রাস্তাও বেহাল। প্রশাসনের শীর্ষ সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গে যাওয়ার কথা। তবে ধসের দরুন তিনি শেষ পর্যন্ত পাহাড়ে না-ও যেতে পারেন।

উত্তরবঙ্গ ও উত্তরাখণ্ডে দুর্যোগের পরে সরকার উদ্ধারকাজে তৎপর হয়েছে। পর্যটকদের সচেতনতার অভাব নিয়ে ক্ষোভ রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেও। নবান্নের অন্দরের মনোভাব, বিপদে পড়লে আর্থিক এবং অন্যান্য সাহায্য করা সরকারের কর্তব্য। কিন্তু সচেতনতার অভাব বা ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতায় যখন জীবনহানি ঘটে, তখন হাজারো সাহায্য করেও সেই ক্ষতি পূরণ করা যায় না। বরং সচেতন থাকলে সামগ্রিক ভাবেই বিপদের আশঙ্কা কমে। প্রশাসনের বক্তব্য, এখন তো আবহাওয়া দফতর অনেক আগে থেকেই পূর্বাভাস দেয়। উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় যাঁরা বেড়াতে কিংবা ট্রেকিংয়ে যান, তাঁরা সেই পূর্বাভাস দেখেন কি না, তা নিয়েও এ বার জোরদার প্রশ্ন উঠছে।

এই সূত্রে রাজ্যেরই এক মন্ত্রীর বকুনি খাওয়ার কথা শোনা গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে। তিনি এখন কেদারনাথে রয়েছেন। সেই খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ফোন করে অবিলম্বে সমতলে ফিরতে বলেছেন। মন্ত্রী অবশ্য কেদারে কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই বলে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আশ্বস্ত হওয়ার বদলে মন্ত্রীর সচেতনতার অভাবের কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বিস্তর বকুনি দিয়েছেন বলেই খবর।

সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্যের যুব কল্যাণ দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী ট্রেকিংয়ে যেতে হলে সরকারকে সবিস্তার তথ্য জানাতে হবে। সে-ক্ষেত্রে কেউ বিপদে পড়লে দ্রুত উদ্ধারকাজ করা সম্ভব। যদিও কার্যত কেউই এই নিয়ম মানে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement