ফাইল চিত্র।
বৈধ পাসপোর্ট আছে। তা সত্ত্বেও সিম-বক্স ব্যবহার করে ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালানোর অভিযোগে ধৃত বাংলাদেশি আবু সুফিয়ান মামুন সেই পাসপোর্ট ছাড়াই এ দেশে বসবাস করছিল। বুধবার রাতে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) মামুনের সঙ্গে সঙ্গে রণজিৎ নাহা ও ইরশাদ আলি মল্লিক নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু ওই চক্রের কাজকর্ম নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
নিছক রাজস্ব ফাঁকি দিতেই সিম-বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছিল, এটা মানতে রাজি নন গোয়েন্দারা। কারা, কী উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে ফোন করছিল, তা নিয়ে অন্ধকারে পুলিশ। তারা বলছে, মনে হচ্ছে কোনও ষড়যন্ত্র চালাতেই ওই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, যে-সব সিমকার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলির কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রথমে গোয়েন্দারা লক্ষ করেন, কিছু নম্বর থেকে শুধুই আউটগোয়িং কল হচ্ছে, ইনকামিং হচ্ছে না। সন্দেহ হওয়ায় তদন্ত চালাতেই সিম-বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপনে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালানো একটি চক্রের সন্ধান মেলে। তদন্তকারীদের সূত্রের খবর, সিম-বক্স প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে বিদেশ থেকে আসা আন্তর্জাতিক কল মোবাইলে ফুটে উঠছিল লোকাল কল হিসেবে।
এসটিএফ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুরদুয়ারের দাঁড়াগাওয়ে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি এবং শিলিগুড়ি থেকে একটি— মোট চারটি সিম-বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, দাঁড়াগাওয়ে মামুনই পরিচিত এক জনকে ভুল বুঝিয়ে ভাড়ার ঘরে ওই সিম-বক্স রেখে এসেছিল। অভিযোগ, বাকিরাও নদিয়ার নাকাশিপাড়া, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে একই কায়দায় বছর দুয়েক ধরে ঘর ভাড়া নিয়ে সিম-বক্সের সাহায্যে অবৈধ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ খুলে জালিয়াতির কারবার চালাচ্ছিল।
তদন্তকারীরা জানান, সিম-বক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে এর আগে দেশের অন্যত্র জালিয়াতি চালিয়েছে দুষ্কৃতী চক্র। মাস তিনেক আগে এ রাজ্যে সেনাকর্মীদের কাছে কিছু নম্বর থেকে সন্দেহজনক কল এসেছিল। দেখা যায়, সেগুলি এসেছিল সব বেঙ্গালুরু থেকে। পরে সেখানকার পুলিশ একই ভাবে সিম-বক্সের মাধ্যমে ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সন্ধান পায়। তদন্তকারীদের অনুমান, বেঙ্গালুরুর সেই চক্রের সঙ্গে এ রাজ্যে ধৃতদের যোগ থাকতে পারে।