শেষ পর্যায়ের কাজ বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরির কাজ প্রায় শেষ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সামনের মাসেই তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে পারে। সেই উদ্বোধনে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এমনই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও স্থায়ী শিক্ষক, কর্মী নেই। অন্য পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। ফলে, পুরোদমে পঠন-পাঠন শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা।
২০০০-২০০১ সালে তৎকালীন বাম সরকার শিল্পের জন্য শিবপুর মৌজায় প্রায় ৩০০ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করেছিল। ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ওই জমিতে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, গীতবিতান আবাসন, ক্ষুদ্র বাজার ও আইটি হাব তৈরি করবে সরকার। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে পথচলা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েক জন শিক্ষক ও শ’খানেক পড়ুয়াকে নিয়ে স্নাতকোত্তরের পঠন-পাঠন শুরু হয়। নিজস্ব ভবন না থাকায় আইটি হাবের ভাড়া ঘরেই ক্লাস শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজি ও গণিত— এই চারটি বিষয় পড়ানো হয়। পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় ৫০০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’জন মাত্র শিক্ষাকর্মী আছেন। তাঁরা অস্থায়ী। অতিথি শিক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথি শিক্ষক মিলিয়ে ৪৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্বপন দত্ত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। এর পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বাগত সেনকে তিন মাসের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। তিনি চলে গেলে উপাচার্যহীন হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, উপাচার্য না থাকায় সেই সময়ে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। কিছু দিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক দিলীপকুমার মাইতিকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, নতুন উপাচার্য নির্মাণসংস্থা হিডকো-কে ভবনগুলি দ্রুত হস্তান্তর করতে বলেন। সেই মতো কাজ প্রায় শেষের দিকে। নতুন বছরের শুরুর দিকে ভবনগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
উপাচার্য বলেন, “আশা করছি জানুয়ারিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনগুলিতে ক্লাস শুরু করতে পারব। একই সঙ্গে নতুন ২০টি বিষয়, বেশ কিছু কোর্স চালু করার ভাবনাও রয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যপাল এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘অটোনমাস বডি’র স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। স্বীকৃতি মিললেই সমস্ত কিছু পূরণ হবে বলে আশা করছি।”